একত্রিশ বছরের ডার্টফোর্ড ব্রীজ

লুৎফুন নাহার

এখন বাজে সকাল সাড়ে ছয়টা। শীতকালে সকাল সাড়ে ছয়টাতেও গ্রীষ্মের মধ্যরাতের মত অন্ধকার জমে থাকে। লেকসাইড যাবার পথে বসে আছি ডাবল ডেকার বাসের আপস্টেয়ারে। বাস রাইডের ক্ষেত্রে আপস্টেয়ারের বাম পাশের সামনের সিটটাই আমার অধিক পছন্দের।

মূল বাস স্টেন্ডের দুই বাসস্টপ পরেই আমার বাসস্টপ থাকায় অফ পিক টাইমের বেশির ভাগ সময়ই পেয়ে যাই এই কাঙ্খিত সিটটি। তারপরের ৪৫ মিনিটের জার্নি এক নিগূঢ় ভালো লাগায় দুইপাশের যাবতীয় সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে কত দ্রুত শেষ হয়ে যায় তা ঠাহর করা যায় না প্রায়ই।

আজ চলতে চলতে এক সময় একটু বেশিক্ষণ সময়ের জন্য বাসটা এসে থামলো ইউ এস পি কলেজের সামনের বাসস্টপে। উইক ডে’র সকাল তাই অফিস যাত্রীদের দ্রুত উঠানামা চলমান। এইসব চলমান মানুষের চলা দেখাটাও এক ধরনের নেশা ধরায় মনে।

Post MIddle

এইসব নেশার ঘোর কাটিয়ে হঠাৎ সামনে তাকাতেই চোখে পড়লো সারি সারি হেড লাইটের দ্রুত উঠানামার দিকে। মুহূর্তেই বোঝা গেলো ওটা ডার্টফোর্ড ব্রীজের (দ্বিতীয় কুইন অ্যালিজাবেথ ব্রীজ) দৃশ্য। অন্ধকারে অদৃশ্য ব্রীজের উপরে দ্রুত বেগে আসা যাওয়া গাড়িগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে আকাশ থেকে নেমে আসছে রাশি রাশি উল্কাপিণ্ড আর জমিন ছুঁয়ে তৎক্ষনাত বাধ্য বাচ্চার মত ফিরে যাচ্ছে সব আবার সেই আকাশেই।

ডার্টফোর্ডের ব্রীজটা মেইন ল্যাণ্ড থেকে ঠিক ততোটাই উপরে! টেমস নদীর উপর ১৯৯১ সালের অক্টোবর থেকে ৩১ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এই একটিমাত্র ব্রীজই সংযোগ স্থাপন করেছে ইংল্যান্ডের এসেক্স আর কেন্ট নামন স্থান দু’টোকে যা কিনা অল্প সময়ের জন্য গোটা ইউরোপের সব চেয়ে দীর্ঘতর ব্রীজ ছিলো। যার দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২,৮৭২ মিটার।

 

লুৎফুন নাহার

লেখিকা:লুৎফুন নাহার

পছন্দের আরো পোস্ট