বাকৃবিতে কৃষি অর্থনীতি বিভাগের ভার্চুয়াল সেমিনার

মো রায়হান আবিদ।

‘করোনা মহামারিতে কৃষির অগ্রগতি বাধা প্রাপ্ত হলেও সরকার তা কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিদেশের উপর কোনক্রমেই নির্ভরশীল হতে চাই না। কৃষি আমাদের সরকারের অগ্রাধিকারের এক নম্বর সেক্টর এবং এটি অব্যাহত থাকবে। কৃষি ও কৃষিপণ্য উৎপাদন ক্রমাগত বৃদ্ধির দিকে।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অর্থনীতি বিভাগের আয়োজনে “বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ ঃ কতটুকু কৃষি এবং খাদ্য ব্যবস্থা সহায়ক?’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। মঙ্গলবার (২৮জুন) সকাল ১১টায় অনলাইনে জুম প্লাটফর্মে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

বাকৃবির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডলের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন কৃষি অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. হাসনীন জাহান।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. হাসনীন জাহান দেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান ও কৃষির উন্নয়নের বাঁধাগুলো তুলে ধরেন। এসময় তিনি বলেন, জিডিপিতে কৃষির অবদান ১২ দশমিক ৭ শতাংশ যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি ও কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এছাড়া কৃষিকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে কৃষির জাতীয় বাজেট ১৬ হাজার কোটি থেকে উন্নীত করে ২৪ হাজার কোটিতে উন্নীত করা হয়েছে। এবারের জাতীয় বাজেটে কৃষির জন্য প্রায় ৬ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

Post MIddle

তিনি আরও বলেন, কৃষিকে সম্পূর্ণ প্রযুক্তির আওতায় আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় সরকার ২০১০ সাল থেকে ৫০-৬০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে প্রায় ৭১ হাজার কৃষিজ যন্ত্র বিতরণ করেছে। তার মধ্যে ধান কাটা ও মাড়াইকারী যন্ত্র, কাটার যন্ত্র রিপারস্, ক্লিপারস্সহ পাওয়ার টিলার অন্যতম।

এছাড়া দেশীয় কৃষি যন্ত্রগুলোর আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করাও জরুরি। এজন্য সরকার ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ৩হাজার ২’শ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের মতে খুব শীঘ্রই বিশ্ব খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হবে। কৃষির সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যার মধ্যে কোভিড-১৯ এর মহামারীর প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাত, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, জলবায়ুর পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ অন্যতম সমস্যা।

অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের অনেক বিজ্ঞানীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যোগদান করেন।

সেমিনারে বক্তারা বাজেটের বরাদ্দ যথাযথভাবে কাজে লাগাতে কৃষি সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো, কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া, ধান-চাল সংগ্রহের সক্ষমতা বৃদ্ধি, হাওড়ের বন্যা মোকাবেলায় শস্য বীমা চালু, কৃষি পণ্যের আপেক্ষিক আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে আমদানি-রপ্তানি কৌশল নির্ধারণ, রপ্তানি নির্ভর খাতগুলোতে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা ইত্যাদি বিষয়ে নানান মতামত দেন।

পছন্দের আরো পোস্ট