জাবিতে ৩৯তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন

জাবি প্রতিনিধি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ৩৯তম বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট হলে অনুষ্ঠিত এ অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: নূরুল আলম তাঁর ভাষণের শুরুতে করোনা উত্তরণে সরকার কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

উপাচার্য তাঁর ভাষণে নিজস্ব অর্থায়নে বাঙালির স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের সাহসী পদক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উপাচার্য তাঁর ভাষণে বিগত তিন শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ধরনের কার্যক্রম তুলে ধরেন।

এসময় তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতে আমরা ক্ষণিকের জন্য থমকে দাঁড়ালেও দ্রুত নিজেদের সামলে নিতে পেরেছি। অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা গ্রহণসহ দুর্যোগকালীন পরীক্ষা অর্ডিন্যান্স প্রণয়ন করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলনামূলকভাবে সেশনজটমুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছি।

উপাচার্য তাঁর ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয়কে আমুল বদলে দেয়ার জন্য ১৪৪৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যয়সংবলিত “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন” শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

এসময় তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম ধাপ হিসেবে ছাত্রদের ৩টি এবং ছাত্রীদের ৩টি আবাসিক হলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে। আগামী অল্প সময়ের মধ্যে এসব হলে শিক্ষার্থীদের উঠানো যাবে।

Post MIddle

উপাচার্য বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে নতুন ১৪টি স্থাপনার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। এসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমুল পরিবর্তন আরও দৃশ্যমান হবে।

উপাচার্য তাঁর ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেন, পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার মধ্যদিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। উপাচার্য দল-মতের উর্ধ্বে উঠে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণাকে বিশ্ব মানের পর্যায়ে এগিয়ে নেয়ার ব্রত গ্রহণের আহবান জানান।

উপাচার্য বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধেয় হলো জ্ঞান। শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ যদি অপরের অনুসরণীয় হতে পারেন, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। উপাচার্য বিষয়ে এ সকলকে বিশেষ যত্নবান ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান।

উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে বলেন, ‘আশা’ এবং ‘স্বপ্ন’ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। এ দু’টি অভিধাকে মনে ধারন করে মানুষ সামনে অগ্রসর হয়। উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার ২০২১-২০২২ অর্থবছরের ২৭৮ কোটি ২ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ২৭৯ কোটি ১৩ লাখ টাকার প্রস্তাবিত মূল বাজেট উপস্থাপন করলে তা পাশ হয়। অধিবেশনে সিনেট সদস্যগণ উপাচার্যের ভাষণ ও কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের উপস্থাপিত বাজেট বক্তৃতার ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

অধিবেশনে বিগত তিন শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বৃবিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারি এবং দেশের অন্যান্য যে সকল ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের জন্য শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। অধিবেশন পরিচালনা করেন সিনেটের সচিব ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ।

পছন্দের আরো পোস্ট