কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটিতে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া ডায়ালগ
উদ্ভাবনী এবং প্রযুক্তিবান্ধব বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষে কম্পিউটার শিক্ষার উন্নতির জন্য কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আজ শনিবার ১১ জুন, ২০২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে “ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া ডায়ালগ” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। সেশনে কো-চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ ও স্কুল অব লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক এএসএম সিরাজুল হক।
সেমিনারের মডারেটর, পরিকল্পনাকারী এবং এই প্রোগ্রামটি সার্বিকভাবে পরিচালনা করেন স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিন এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর সৈয়দ আক্তার হোসেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর এম. সোহেল রহমান এবং ব্রেইনস্টেশন 23-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জনাব রাইসুল কবির মূল প্রবন্ধ উপ্সথাপক হিসেবে তাদের একাডেমিক ও শিল্প অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
প্যানেল আলোচনাকারীদের মধ্যে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি হেড অব পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন মিঃ কার্ল ইউ ইং, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশ -এর চ্যানেল ডিরেক্টর মিঃ অ্যালেক্স লি, এন্টারপ্রাইজ বিজনেস বিভাগ; ডাটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট এম. মঞ্জুর মাহমুদ, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি একাডেমিকস (BSPUA)-এর সভাপতি এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এমবিএ এবং এইচআরএম প্রোগ্রামের পরিচালক প্রফেসর ডঃ ফরিদ এ সোবহানী, সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ-এর সভাপতি তপন কান্তি সরকার, ইউওয়াই সিস্টেমস লিমিটেড-এর চেয়ারপারসন ও সিইও এবং বেসিস’র সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মিসেস ফারহানা এ. রহমান, , বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক জনাব মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া, টেকসলিউশনস-এর সিইও মিসেস নাজনীন নাহার, অরেঞ্জবিডি-এর ডিরেক্টর এবং চিফ অপারেটিং অফিসার হাফেজ আহমেদ এবং ব্যাটারি লো ইন্টারেক্টিভ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মিনহাজ-উস-সালেকিন ফাহমে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে আমাদের দেশ ডিজিটালাইজেশনের সক্রিয় প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আইসিটি বিভাগ, এটুআই এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সরকারী বিভাগ এবং সেইসাথে বেসরকারী শিল্পগুলি একটি বিশাল অবদান রাখছে। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকরা সাইবার-নিরাপত্তা, স্মার্ট অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোটিক্স, স্মার্ট কম্পিউটার, বিজি ডেটা, ব্লক চেইন, আইওটি, ক্লাউড স্টোরেজ এবং শিল্পের অন্যান্য ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ট্রাস্টি হিসেবে আমি গর্বিত, CSE বিভাগ থেকে স্নাতকরা বর্তমানে বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানিতে শীর্ষস্থানীয় অবস্থানে কাজ করছে। এছাড়াও, আমরা কীভাবে স্টার্ট আপ ফান্ডের জন্য আবেদন করতে হয়, ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিংয়ের জন্য একটি পরামর্শ এজেন্সি খুলতে হয় সে সম্পর্কে ফলিত জ্ঞানকে অনুপ্রাণিত করি যাতে তারা পরবর্তী প্রজন্মের স্মার্ট উদ্যোক্তা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৩৫ টিরও বেশি কোম্পানীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখছি। তাদের কোম্পানির আইটি টিমে আমাদের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ এবং চাকরি করতে পারছে। এখন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় প্ল্যাটফর্মের বাজারে অন্যান্য শিল্পকে সংযুক্ত করার উচ্চ সময়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন ২০০৮ এর সঙ্গে আমরা ২০২২ চিন্তা করি, এটা বিগ ডিফারেন্ট। আমাদের ব্রডব্যান্ড নামে কিছু ছিলই না। এখন সারাবাংলাদেশে ১২ কোটি মানুষের কাছাকাছি ব্রডব্যান্ড। তখন আইসিটি সবে মাত্র শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের বিনিয়োগ ছিল ২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। যা এখন প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার। ফ্রিল্যান্সিং শব্দটাই ছিল নতুন। এখন প্রায় সাড়ে ৬ লাখ তরুণ তারা ফ্রিল্যান্সিংয়ের আছে। ২০৩১ সালের মধ্যে আমরা ইনক্লুসিভ নেশন হতে চাই। সবার আইটি ক্যাপাসিটি ডেভেলপ করা দরকার। কারণ আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ জন সম্পদ। আমাদের ৩৫ বছরের নিচে জনসংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। তাদেরকে কাজে লাগানো দরকার।
আইটি আমাদের সবচেয়ে সম্ভাবনার জায়গা।আগামী বছর থেকে ক্লাস ওয়ানে কম্পিউটার লিটারেসি শুরু হচ্ছে। আমাদের বাচ্চারা যে সময় এ ফর আপেল শিখবে ঠিক সেই সময়েই তারা শিখবে কোডিং।ক্লাস ফাইভে যখন উঠতে তারা তখন কম্পিউটার ওরিয়েন্টেড হয়ে বড় হবে।
আমাদের দেশে ১৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাব করে দেয়া হয়েছে। শুধু আইটি নয়, ভাষাও তারা শিখবে। ইংরেজি, ফ্রেন্স, আরবি, চাইনিজ- যার যেটা শেখার প্রয়োজন তারা শিখবে। ২০২৫ সালের মধ্যে এমন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকবে না যেখানে কম্পিউটার ল্যাব নেই। ক্লাস ছিক্স থেকে টেন পর্যন্ত আইসিটি কম্পলসারি সাবজেক্ট।
হাইটেক পার্ক থেকে ৩৬ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আমি মনে করি জাতি প্রস্তুত হতে যাচ্ছে। অবশ্যই আমাদের আরও আরও বেশি করা দরকার। আমাদের স্পিডি হতে হবে। ম্যানপাওয়ার প্রস্তুত করা হচ্ছে, তাদের কাছে ব্রডব্যান্ড দেয়া হচ্ছে, ল্যাপটপ আমাদের দেশে তৈরি হচ্ছে। ২৫-৩০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের বিশাল জনগোস্টি বাড়িতে বসে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে, দেশ এগিয়ে যাবে।
আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি মেধাবী । শুধু তাদের সিস্টেমটা তৈরি করে দিতে হবে। আমাদের ইকো সিস্টেমটা নেই। আগামী ৩০ সালের পর বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে আসবে ইলন মাস্ক, মার্ক জুকারবার্গ, এদের মতো বড় বড়, যারা সারা দুনিয়া জয় করে ফেলবে।
প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কানাডিয়ান ইউনিভার্সিকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ল্যাব তৈরি করতে পারি, ইনোভেশন হাব তৈরি করতে পারি। একসঙ্গে স্টার্টআপের জন্য কাজ করতে পারি।ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া ডায়লগের মতো গর্ভমেন্ট-একাডেমিয়া ডায়গল করার আহ্বান জানান তিনি।