জাককানইবিতে ১৭ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

বিশ্বমানের স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যানের গুরুত্ব তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাডেমিক মাস্টার প্ল্যান করতে হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যানের দিকে ঝুঁকেছে। কিন্তু ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যানের আগে একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান না থাকলে আমরা ভালো করতে পারবো না।

বুধবার (১১ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাহি সাম্যের গান মঞ্চে ১৭ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে দু’দিনব্যাপী আয়োজিত শেষ দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) এর সংসদ সদস্য আলহাজ হাফেজ মাওলানা মো. রুহুল আমীন মাদানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. কাউসার আহাম্মদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মো. জালাল উদ্দিন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এ.বি.এম. আনিছুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

বর্তমান সরকার শিক্ষিত বেকার তৈরি করতে চায় না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লব একদম দরজায় করা নাড়ছে। তাই আমরা যে গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছি তাদেরকে একদম জব-রেডি হিসেবে তৈরি করছি কি না-সেদিকটি দেখতে হবে। আমি ডিগ্রী দিলাম,সনদ দিলাম সে যদি চাকরী না পায় একজন উদ্যোক্তা হতে না পারে তাহলে আমার সে সনদের কোন দাম থাকবে না। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘সফ্ট স্কিল’ বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেন।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমান প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগকে স্বাগত জানান মাননীয় মন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে সুরক্ষিত করতে সিসিটিভি স্থাপনের নির্দেশ দেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবল অপ্রতুলতা, সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)র সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে তাঁর মন্ত্রণালয় থেকে সর্বাত্নক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে অ্যালামনাইদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যশ্রেষ্ঠ একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডা. দীপু মনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে সুরক্ষিত করে গড়ে তোলার পাশাপাশি এখানকার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি একাডেমিক মাস্টার প্লান তৈরি করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার সহযোগিতা করবো।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি স্মার্ট বিশ্বমানের ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলব। শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন নিয়ে বর্তমান সরকারের যে অভিযাত্রা সেই অভিযাত্রা শামিল হয়ে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করবো। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হবে।

এর আগে দুপুরে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে পৌছালে তাকে ফুলেল স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। এরপর মাননীয় মন্ত্রী প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেন পুলিশের একটি চৌকস দল। সফরকালে মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি অবকাঠামো উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের নানা স্তরের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।