চেরী ফুটলেই ম্যাগনোলিয়া না ফোটার দুঃখ কেটে যাবে

রিমি রুম্মান।

পার্কিং স্পেসে গাড়ি পার্ক করে আংশিক বাজার নিয়ে গেটের দিকে যাচ্ছিলাম। বাকী বাজার দ্বিতীয় দফায় নেবো। প্রতিবেশী নিশানের সাথে দেখা। সে গায়নিজ (গায়ানা থেকে আগত) হলেও দেখতে বাঙালী বলে ভ্রম হবে যে কারও । পার্কিং স্পেস থেকে গাড়ি বের করছিল। কোথাও যাবে হয়ত।

চারিদিকে ঝিকিমিকি রোদ। শীতল হাওয়া। বাতাসের শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দের অস্তিত্ব নেই। ‘শুভ সকাল’ বিনিময় শেষে ভাবলেশহীনভাবে বলল, এবার বুঝি উইন্টার আর গেল না! সামার আসি আসি করেও আবার শীতের আগ্রাসন! আমি বেদনা মিশ্রিত স্বরে বলি, ‘এবার ম্যাগনোলিয়া ফুটলো না! ঠান্ডা-গরমে নষ্ট হয়ে গেল!’ হাঁটতে হাঁটতে সামনে এগোই। আধো প্রস্ফুটিত চেরীফুলের বৃক্ষের দিকে তাকিয়ে সে আশার কথা শোনাল, ‘চেরী ফুল ফুটলেই ম্যাগনোলিয়া না ফোটার দুঃখবোধ কেটে যাবে’। আমরা একযোগে লনের একপাশে বেড়ে ওঠা ঘন হলদে পাতার দিকে দৃষ্টি ফেরাই।আসা-যাওয়ার পথে এমন আবহ ক্ষণিকের জন্যে হলেও আমার চৈতন্য মোহাবিষ্ট করে রাখে।

কথা বলতে বলতে নিশান আমার বাজারের ব্যাগ হাতে তুলে নিয়েছে, খেয়াল করিনি। লন পেরিয়ে একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে গেল। আমি ধন্যবাদ দিতে পিছু ফিরে দেখি সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে যাচ্ছে ইন্জিন চালু করে রাখা গাড়ির দিকে। দরজায় চাবি ঘোরানোর সময় মনে পড়ল, যে দোকান থেকে মাছ মাংস কিনেছি, সে দোকানের বয়স্ক মানুষটিও সব বাজার গাড়িতে তুলে দিয়েছিল। মানুষের এইসব ঋণ শোধ করার সুযোগ হবে কিনা কে জানে।

Post MIddle

দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ।

ভালো থাকুন সকলে।

রিমি রুম্মান
২১শে এপ্রিল, ২০২২
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র

পছন্দের আরো পোস্ট