পতাকা উত্তোলন দিবস উদযাপিত

ঢাবি প্রতিনিধি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, আমাদের ইতিহাসের প্রতিটি পদে, প্রতিটি ক্ষণে, প্রতিটি পটভূমিতে এবং প্রতিটি ঘটনায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাজ্বল্যমান ও দৃশ্যমান। তাই ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবসেও জাতির পিতা আমাদের সামনে চলে আসেন। ২ মার্চ ২০২২ বুধবার ঐতিহাসিক বটতলায় ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগীত বিভাগের শিক্ষক আজিজুর রহমান। সকালে বিশ^বিদ্যালয় কলাভবন সংলগ্ন বটতলা প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শাহাদাৎবরণকারী, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাৎবরণকারী ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একই সাথে ঐতিহাসিক এই বটতলায় সমবেত হয়ে ১৯৭১ সালের ২রা মার্চে তৎকালীন ডাকসুর নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য যেসব ছাত্র নেতারা বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা প্রথম উত্তোলন করেছিলেন তাদের প্রতিও উপাচার্য শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতার জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিকসহ যে সকল পটভূমি ও উপাদান প্রয়োজন ছিল তার সবকটির সফল নেতৃত্ব ও মূল জোগানদাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু তাঁর দূরদর্শী পরিকল্পনার মাধ্যমেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা নির্মাণ ও উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এটি ছিল বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলনের পরিকল্পনা ও সফল বাস্তবায়ন করেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একইসূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, পতাকা উত্তোলনের পটভূমি এবং মহান স্বাধীনতাসহ আমাদের সকল গৌরবময় আন্দোলন ও অর্জনের ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে উপাচার্য উল্লেখ করেন।

Post MIddle

সভাপতির ভাষণে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সকল আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পতাকা উত্তোলনের পটভূমিসহ স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের সকল ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জানতে হবে।

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, পতাকা উত্তোলনের ঘটনা একটি তাৎক্ষণিক বিষয় ছিল না। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশেই সেদিন প্রথম পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। এই পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে স্বাধীনতার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ পতাকা উত্তোলনের ঘটনা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে প্রেরণা জুগিয়েছিল।

আলোচনা পর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ এবং নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা দেশের গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। এছাড়াও, প্রখ্যাত বাউল সংগীত শিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়ের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

পছন্দের আরো পোস্ট