সিলেট সিটি কর্পোরেশনে যুক্ত হলো সিকৃবি ক্যাম্পাস
সিকৃবি প্রতিনিধি।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যুক্ত হলো সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ক্যাম্পাস। সিকৃবি ক্যাম্পাস আগে টুলটিকর ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত ছিলো। সিটি কর্পোরেশনের নতুন অন্তর্ভুক্ত এলাকার তালিকা প্রকাশ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলো জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন থেকে জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করা হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে।
এদিকে গতকাল (১২ জানুয়ারি) বুধবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের আমন্ত্রণে পরিদর্শনে আসেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরি। বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে সিটি মেয়রকে অভ্যর্থনা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদার। এসময় ভাইস-চ্যান্সেলর সম্মেলন কক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ বদরুল ইসলাম শোয়েবের সঞ্চালনায় এসময় মেয়রের কাছে বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ। দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্থায়ী স্টেশন নির্মাণ, সুপেয় জল সরবরাহের সংযোগ প্রদান, মাদানীবাগ ঈদগাহ হতে টিলাগড় ইকোপার্ক রাস্তায় সিকৃবির স্থায়ী তোরণ/গেইট নির্মাণ, ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কে স্ট্রিট-লাইট সরবরাহ, ক্যাম্পাসের সীমানা প্রাচীর স্থাপন, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, সৌর বিদ্যুতায়িত বাতি স্থাপন, পানি নিষ্কাশনের ড্রেন সংস্কার, মশক নিধনে নিয়মিত স্প্রে প্রদান ইত্যাদি। এছাড়াও মাছের মাধ্যমে মশার বংশ নিধন বিষয়ক গবেষণা, মেয়েদের হলের নিরাপত্তা জোড়দার, পরিবেশবান্ধব উপায়ে পলিথিন ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য ব্যবহার করে কম্পোস্ট সার তৈরি. র্যাবিস ভ্যক্সিন প্রদানসহ নানা উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনা সভায় মেয়র আরিফ বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি শিক্ষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রতি আমার আলাদা রকমের দূর্বলতা রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের ভেতরে আসাতে বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি কর্পোরেশন উভয়ই লাভবান হলো। কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত হবার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা আরও বেশি নাগরিক সুবিধা পাবেন।”
তিনি সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখার মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বোটানিকাল গার্ডেন করার প্রস্তাব করেন সিটি মেয়র। সিলেট শহরে পানি নিষ্কাষন ও ছাদকৃষি বিষয়ে সিকৃবির গবেষকদের বৈজ্ঞানিক চিন্তা করারও অনুরোধ করেন তিনি। ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মতিয়ার বলেন, “সিটি কর্পোরেশন তার আওতাভূক্ত এলাকাতে যে সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় তা থেকে আমরা এতদিন বঞ্চিত ছিলাম। এখন হতে অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, সরকারী বাজেট বরাদ্দসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা আরো মসৃন হবে।”
সিকৃবি রেজিস্ট্রার মোঃ বদরুল ইসলাম শোয়েব বলেন, উন্নয়নের মানসকণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারবাহিকতায় সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভূক্ত হলো সিকৃবি ক্যাম্পাস।” আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা), প্রক্টর, অফিসার পরিষদের সভাপতি, দপ্তরপ্রধানবৃন্দসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। সিটি কর্পোরশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নূর আজিজুর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রূমা ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ মতিউর রহমান খানও আলোচনা সভায় যোগ দেন। সভাশেষে সিটি মেয়রকে ক্রেষ্ট দিয়ে সংবর্ধনা জানায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ।