চবি নাট্যকলা বিভাগের ৫ম নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত
চবি প্রতিনিধি।
মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী’র গৌরবোজ্জ্বল সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে দিনব্যাপি ৫ম নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (২৩ ডিসেম্বর ২০২১) চবি ক্যাস্পাসে উন্মুক্ত মঞ্চে এ নাট্যোৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভাষণ দেন এবং উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এম.পি.।
নাট্যোৎসবে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ ও বাংলাদেশ টেলিভিশন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার জনাব নিতাই কুমার ভট্টাচার্য্য।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকে ভূষিত কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন ও একুশে পদকে ভূষিত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি শাকিলা তাসমিন।
প্রতিমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উপস্থিত সকলকে মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান এবং চবি নাট্যকলা বিভাগের নাট্যোৎসবে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেকে অত্যন্ত গৌরবান্বিত বলে অনুভূতি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সাহিত্য-সংস্কৃতি, রাজনীতির আদিভূমি এ চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে জন্ম নিয়েছেন অনেক জ্ঞানী-গুণী ও প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব। তিনি আরও বলেন, বিপ্লবীদের চারণভূমি এ চট্টগ্রাম; যাঁদের ত্যাগ অনস্বীকার্য। প্রসঙ্গক্রমে প্রতিমন্ত্রী বলেন,অপরূপ সৌন্দর্যের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতির ক্ষেত্র প্রসারের জন্য নাট্যকলার সাথে নৃত্যকলা, ফটোগ্রাফি, শিল্পকলাসহ অন্যান্য বিভাগ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র ফ্যাকাল্টি খোলার বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার জন্য উপাচার্যের প্রতি আহবান জানান।
প্রতিমন্ত্রী চবির এ উন্মুক্ত মঞ্চকে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সকল প্রকার সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন। তিনি দৃঢ় আস্থা নিয়ে বলেন, নারী নেতৃত্ব ও নারী জাগরণের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব উপাচার্যের বলিষ্ট ও গতিশীল নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।
উপাচার্য তাঁর ভাষণে শত ব্যস্ততার মাঝেও চবি নাট্যকলা বিভাগের ৫ম নাট্যোৎসবে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
একইসাথে উপাচার্য উপস্থিত সকলকে মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে সংস্কৃতি চর্চা শিক্ষার্থীদের যেমন আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠতে সাহায্য করে তেমনি তাদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে হলভিত্তিক সাংস্কৃতিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, একটি কঠিন ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায়। বিশেষকরে সংগীত, নাট্যকলা ও চারুকলা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষার পাশাপাশি বিশেষ সাক্ষাতকারের মাধ্যমে মান যাচাই করে যোগ্যদের ভর্তি করা হয়। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অন্ধকারের সকল অপশক্তিকে পদদলিত করে সবাইকে সাথে নিয়ে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেন।
চবি নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক মামুনুল হকের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ, সুধিবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সূচিত হয়। অনুষ্ঠানে নাট্যকলা বিভাগের স্নাতক সম্মান পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত মোঃ সোলায়মানকে নাট্যজন শান্তনু বিশ্বাস স্মৃতি বৃত্তি প্রদান করা হয় এবং বৃত্তি প্রাপ্তকে শান্তনু বিশ্বাস রচিত পুস্তক উপহার হিসেবে প্রদান করেন প্রয়াত শান্তনু বিশ্বাসের সহধর্মিণী শুভ্রা বিশ্বাস। বিকেল ৪টায় চবি নাট্যকলা বিভাগ এবং সংগীত বিভাগের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক ও পাপেট শো।