ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রকল্যাণ পরিষদের আলোচনা সভা
বিল্লাল হোসেন স্বাধীন,কুবি প্রতিনিধি।
বঙ্গবন্ধু কোনো দলের নয়, বঙ্গবন্ধু জাতির। বঙ্গবন্ধু জাতির নেতা থেকে বিশ্ব নেতায় রুপান্তরিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশ এই তিনটি শব্দ যদি আমরা অনুধাবন করতে পারি, হৃদয়ে ধারণ করতে পারি তাহলে আমাদের দেশ সম্পর্কে অজানা কিছু থাকবে না।”স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবদুস সালাম।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের(কুবি) ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রকল্যাণ পরিষদ’, রবিবার(১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভার পূর্বে মোমবাতি প্রজ্বলন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
আলোচনায় প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন,’আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছিল ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি ১ কোটির বেশি শরণার্থীকে জায়গা দিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিনবছর বেঁচে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি অনেক মহা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন যার ফল আমরা এখনও ভোগ করছি।’
আলোচনা সভার প্রধান বক্তা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কুমিল্লা জেলা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার নন্দন চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাস এত নাতিদীর্ঘ নয়, অনেক সুদীর্ঘ। ১৯৬৯ এর আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানের বেনিয়া গোষ্ঠী মাথা নত করে ‘৭০ এর নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭০ এর নির্বাচনে বাঙ্গালীরা যখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, তারপর যখন ক্ষমতা দেওয়ার পালা তখন তারা ধানাই পানাই শুরু করে। বিভিন্ন ছুঁতা-নাতা দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নাই। যার ফলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের সকল কিছু বঙ্গবন্ধু তার ৭ই মার্চের ১৮ মিনিটের ভাষনে বর্ণনা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে ঘোষণা করেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”
বিশেষ অতিথি মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আজিজুল হক সেলিম বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সেদিন যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা মোতাবেকই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আপনাদের পিতা-মাতা যদি আমাদের সহযোগিতা না করতেন তাহলে কিন্তু আমরা যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারতাম না। এদেশের ৯৮ ভাগ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন।’
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস, কাস্টমস এন্ড ভ্যাট কমিশনারেটের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ মনির হোসেন, মোঃ আল-আমীন ভূইয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার নুর মোহাম্মদ জিসান সহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ফটো কন্টেস্ট-এর বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয় এবং অতিথিদের ক্রেস্ট সম্মাননা প্রদান করা হয়।