উট উৎসবে অযোগ্য হয় যখন

সৌদি আরবের রিয়াদে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় উট উৎসবের। প্রয়াত বাদশাহ আবদুল আজিজের নামে আয়োজিত এ উৎসব মূলত সুন্দর উট বাছাইয়ের প্রতিযোগিতা। রিয়াদের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় একটি মরুভূমিতে আয়োজিত এ উৎসবে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর উট ব্যবসায়ীরা যোগ দিয়ে থাকেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার পর্যন্ত পুরস্কার পান।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুরস্কারের অর্থের লোভে অসাধু পথ বেছে নিতে দেখা গেছে উট ব্যবসায়ীদের। সৌন্দর্যবর্ধক ইনজেকশন ও কসমেটিক সার্জারি ব্যবহার করে কৃত্রিম উপায়ে সৌন্দর্য বাড়ানোর পথ বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। এমন অবস্থায় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। কৃত্রিমভাবে উটগুলোর সৌন্দর্য বাড়ানো হচ্ছে কি না, তা নিয়ে এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে তারা। এ ধরনের উট পাওয়া গেলে সেগুলোকে প্রতিযোগিতায় অযোগ্য ঘোষণার পাশাপাশি তাদের মালিককে জরিমানা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর অনিয়ম খুঁজে পাওয়ার পর ৪৩টি উটকে প্রতিযোগিতায় অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। ছয় বছর আগে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পর থেকে এবারই এত সর্বোচ্চসংখ্যক উটকে অযোগ্য ঘোষণা করা হলো। এর আগে ১২টির বেশি উটকে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।

Post MIddle

উটের সৌন্দর্য বিবেচনার ক্ষেত্রে তাদের ঠোঁট ও পিঠের কুঁজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এগুলোকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যবহার হচ্ছে কৃত্রিম পদ্ধতি। সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া উটগুলোর ওপর কসমেটিক সার্জারি চালানো হয়েছে কি না কিংবা সৌন্দর্যবর্ধক ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। এক্স-রেসহ বিভিন্ন রোগনির্ণয় পরীক্ষা চালানো হয় তাদের ওপর।

আয়োজকদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেন, কর্তৃপক্ষ চায়, উটগুলো বাস্তবে যেমন দেখতে, তেমন করেই যেন তাদের উপস্থাপন করা হয়। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, উটের ওপর সৌন্দর্য উপকরণ ব্যবহার করাকে পশু নির্যাতন হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এ নিয়মের লঙ্ঘনকারীদের মোটা অঙ্কের জরিমানাসহ পরবর্তী প্রতিযোগিতাগুলোতে নিষিদ্ধ করা হয়।

রিয়াদে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে ৪০ দিনের এই উট উৎসব। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার পাশাপাশি উটের দৌড় প্রতিযোগিতাও হয় এখানে।

পছন্দের আরো পোস্ট