রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

রাবি প্রতিনিধি।

আজ (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে এবং সকাল ৮:৩০ মিনিটে শহীদ মিনার ও বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এসময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া, উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলাম, রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. আবদুস সালাম, বিভিন্ন অনুষদ অধিকর্তা, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় সভাপতি, সিন্ডিকেট সদস্য, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. লিয়াকত আলী, ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক ড. মো. আজিজুর রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ৯:১৫ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে এই আয়োজনে মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর চৌধুরী জুলফিকার মতিন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার ও বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া।

Post MIddle

সেখানে অন্যদের মধ্যে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদ সুখরঞ্জন সমদ্দারের স্ত্রী চম্পা সমদ্দার এবং শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ূমের জ্যেষ্ঠ কন্যা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর মাহবুবা কানিজ কেয়াসহ রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক প্রফেসর মো. তারিকুল হাসান, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল চন্দ্র সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

প্রফেসর জুলফিকার মতিন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, পাকিস্তান আমলে এ দেশীয় আন্দোলন সংগ্রামের মূল শক্তি হিসেবে ভিত্তিভূমি দাঁড় করিয়েছে তখনকার বুদ্ধিজীবীরা। সমকাল পত্রিকাই বলি, আর আবদুল হকের প্রবন্ধের কথাই বলি, আর মুনীর চৌধুরীর কবর নাটকের কথাই বলি, সে সবের দ্বারাই তৈরি হয়েছে আমাদের ভাবজগৎ, আসলে যা ছিল পাকিস্তানী রাষ্ট্র দর্শনের বিরোধী। শিল্পসাহিত্যের কথাই বলি, আর সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপের দিকেই তাকাই, তার সৃজনশীল রূপের বাস্তব প্রয়োগ ঘটে বুদ্ধিবৃত্তিরই পরিচর্যা দ্বারা। তাই, এই ভাবজগৎ যাতে তৈরি হতে না পারে, বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা দ্বারা সমাজকে যেন আলোকিত না করা হয়, সে জন্যই হত্যা করা হয়েছে বুদ্ধিজীবীদের। এটাই হল মূল কারণ।

দিবসের কর্মসূচিতে আরো ছিল বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও সন্ধ্যা ৫:৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা; একই সময়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন; সন্ধ্যা ৬টায় কৌশিক সরকারের নির্দেশনা ও সুমনা সরকারের গ্রন্থনা ও অভিনয়ে নাটক ‘জয়জয়িতা’।

এরপর ৬:৩০ মিনিটে কাজী মামুন হায়দার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মরণজয়ী শহীদ কাইয়ূম’, সাজ্জাদ বকুল কর্তৃক নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘রক্তে যারা শুধলো মায়ের ঋণ’ ও কাওসার চৌধুরী নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘বধ্যভূমিতে একদিন’ প্রদর্শন করা হয়।

পছন্দের আরো পোস্ট