শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা

নিজস্ব প্রতিবেদক।

সৃজনশীল, দক্ষ, মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী তরুণ প্রজন্মের হাতেই আমাদের আগামীর সমতাভিত্তিক উজ্জ্বল বাংলাদেশ নির্মিত হবে বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

তিনি বলেন,‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম, আমাদের কিশোর-তরুণ-যুবারা আমাদের সমাজের প্রধান অংশ। সংখ্যায় যারা বেশি তারা সবাই ইতিবাচক, সুন্দর, সৃজনশীল, দক্ষ এবং যোগ্য। আমরা চাইবো এই অন্তর্ভূক্তির মধ্যে একজনও যাতে বাদ না পড়ে। একজনও যেন মানসিক স্বাস্থ্যে বিষন্ন না থাকে।

নেতিবাচক মনোভাব পোষণ না করে। আমরা যে আধুনিক এবং সমতার সমাজের কথা বলি, সে আদর্শিক স্বপ্নের বাংলাদেশে প্রতিটি নাগরিককে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এই বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের বিষণ্ণ হওয়ার অবকাশ নেই। মানুষ হিসেবে সুন্দর হয়ে জয়ী হতে হবে।’

মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) রাজশাহী কলেজে আয়োজিত ‘রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি’ বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘জীবনে কতটুকুন আয় করবে সেটি মুখ্য নয়, জীবনে সুন্দর মানুষ হবে, সবার পাশে থাকবে এবং অন্যকে সহযোগিতার মনোবৃত্তি ধারণ করবে- এর মধ্যদিয়ে একটি চমৎকার বাংলাদেশ তৈরি হবে।

এটিই হবে আমাদের স্বপ্ন। পুঁজিবাদী সমাজ, ধনতন্ত্রের মালিক হওয়া আমাদের স্বপ্ন নয়। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল সমতার সমাজ, গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের সমাজ। সেই সমাজে আমরা মিলেমিশে সমতাভিত্তিক একটি সমাজ তৈরি করবো সেটিই ছিল আমাদের আকাক্সক্ষা।’

Post MIddle

উপাচার্য আরও বলেন, ‘নি:সন্দেহে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকার প্রতিটি ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে হবে। এ বিষয়ে কোন ধরনের গাফিলতি করা যাবে না। একাত্তরে আমাদের সাড়ে সাতকোটি বাঙালি এক হয়ে ঠিক করেছিল আমরা শোষণ,বঞ্ছনাহীন একটি বাংলাদেশ তৈরি করবো। সেই সাড়ে সাতকোটি মানুষকে একটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন- তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সাড়ে সাত কোটি মানুষকে একই শৃঙ্খলে, বন্ধনে এবং ভালোবাসায় আবদ্ধ করেছিলেন। কারণ তিনি এই প্রিয় মাতৃভূমিকে অবিশ্বাস্য রকমের ভালোবাসতেন।

সেই ভালোবাসার আহ্বানে আমরা যখন শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করলাম, সেটি ছিল দীর্ঘ সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে ৩০ লক্ষ মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন। দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি হয়েছে দীর্ঘ নয় মাসে। সেই ত্যাগের ঋণ শোধ হবার নয়। সেই জাতির সন্তানদের কোন দিন হতাশ হবার নেই, বিষন্ন হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের সামনে শুধু স্বপ্ন থাকতে হবে এই সমাজকে গড়বার। তোমরা যারা সামনে বসে আছো, আমি তোমাদের চোখে মুখে শুধু একটি উজ্জ¦ল বাংলাদেশ দেখি। তোমরাই গড়বে আগামীর স্বপ্নের স্বদেশ।’

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হাবিবুর রহমান, ড. জসিম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাজশাহী কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. নিতাই কুমার সাহা। কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে দুইজন তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

উপাচার্য কর্মশালায় অংশগ্রহণের পূর্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন। রাজশাহী মহিলা কলেজ কেন্দ্রে তিনি সকাল ১০টার দিকে পরিদর্শনে যান। এসময় পরীক্ষা কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন। পরীক্ষার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন উপাচার্য।

পরীক্ষার হলে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালক মো. ফয়জুল করিমসহ সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পছন্দের আরো পোস্ট