শারমিনের আহব্বানে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক।

আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী শারমিন আহম্মেদ এশার আহব্বানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যেগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সাংবাদিকবৃন্দ, ধর্মীয় নেতা, ইমাম, কাজী ও বিবাহ নিবন্ধকদের নিয়ে আলোচনার সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কিশোরী শারমিন আহম্মেদ এশা। উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে কন্যা শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করা হবে এবং বাল্য বিবাহ বন্ধে শিশু বিবাহের ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের মনিটরিং এর আওতায় নিয়ে আসা হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি বলেন, প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের সময় খুৎবার মাধ্যমে নারী শিশু নির্যাতন ও বাল্য বিবাহ বন্ধে আলোচনা করা হবে।

কালিগঞ্জ পেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস বাচ্চু বলেন, বাংলাদেশের প্রথম বাল্যবিবাহ মুক্ত উপজেলা ঘোষনা হওয়ার পরেও দিন দিন বাল্য বিবাহ বাড়ছে। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। সবাই মিলে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে। মোর্শেদুল আলম রিপনের সঞ্চলনায় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস ২০২১ উদ্যাপনের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আশিক বিল্লাহ, অপারেশনস্ ম্যানেজার শ্যামনগর ও কালীগঞ্জ এবং অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অনুষ্ঠানোর সভাপতি শারমিন আহম্মেদ এশা।

Post MIddle

শিশু সুরক্ষা ও বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭-এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন মোক্তার হোসেন, সোশাল ইনক্লুশন স্পেশালিস্ট, নবযাত্রা প্রকল্প, ওর্য়াল্ড ভিশন বাংলাদেশ। উপজেলার বাল্য বিবাহের বর্তমান পরিস্থিতিতে সকল কন্যা শিশুদের সুরক্ষা ও বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য আবেদন জানিয়ে সকল কন্যা শিশুদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শারমিন আহম্মেদ এশা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা হতে ৪৫ জন ইমাম ও কাজীগন এবং উপস্থিত সকলে অঙ্গিকারাবদ্ধ হন যে তারা কন্যা শিশুদের সুরক্ষায় কাজ করবেন এবং শপথ করেন যে সকলে বাল্য বিবাহ বন্ধে কাজ করবেন এবং বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য উপজেলার সাথে সমন্বয় করবেন।

সকল কাজী ও ইমামগন প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হন যে তারা বাল্য বিবাহ নিরুৎসাহিত করবেন। সভাপতির বক্তব্যে শারমিন বলেন,” আমি এ উপেেজলার তথা সারা বাংলাদেশের সকল কন্যা শিশুদের জন্য আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ করছি যে এদেশের সকল কন্যা শিশুদের বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। আমাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আমরা যেন নির্ভয়ে চলাচল করতে পারি। শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পাই। বাল্য বিবাহের মতো ঘৃন্য কাজে সবাইকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। শারমনি বলেন, বাল্য বিবাহ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিৎ এবং কন্যা শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পরিবারে ছেলে শিশুদেরকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। শুধু সরকারী দপ্তরের পক্ষে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

এজন্য প্রয়োজন সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা। শিশুদের সুরক্ষার জন্য ও বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী এবং উপজেলা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটিকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সার্বিক সহায়তা করেছে দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের নেতৃত্বে বাস্তবায়নাধীন নবযাত্রা প্রকল্প।

পছন্দের আরো পোস্ট