বিশ্ব ডিম দিবস ও সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস

মাহফুজা হোসেন।

আজ ৮ই অক্টোবর বিশ্ব ডিম দিবস। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার এই দিনটি পালন করা হয়। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিনটি বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে। অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার প্রথম বিশ্ব ডিম দিবসের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ এনিম্যাল এগ্রিকালচার সোসাইটি ২০১৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্ত হয়। একই বছরের ১১ই অক্টোবর বাংলাদেশে প্রথম ডিম দিবস পালিত হয়।
ডিম একটি সহজলভ্য ও আমিষজাতীয় খাদ্য যাতে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন। ডিমকে বলা হয় সুপার ফুড। প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিমে পাওয়া যায় শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ৯টি অ্যামাইনো এসিড।ডিমের সাদা অংশ (অ্যালবুমিন) থেকেই পাওয়া যায় বেশিরভাগ প্রোটিন।একটি বড় ডিমের ওজন প্রায় ৫০ গ্রাম হয়ে থাকে।ডিমের লুটেইন এবং জিয়াজ্যানথিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রেটিনাকে রাখে সুস্থ। ভিটামিন এ এবং সায়ানোকোবেলামিন মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যারা শরীরচর্চা করেন, তারাও ডিম খেতে পারেন নিয়মিত। কেননা, ডিমে থাকা প্রোটিন, মানবদেহের টিস্যুকে করে মেরামত এবং শক্তিশালী করে মাংসপেশীকে।
অনেকেই মনে করে থাকেন রোজ ডিম খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু গবেষকেরা বলেন, সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনে রোজ একটি করে ডিম খাওয়া আবশ্যক। অপুষ্টি, রক্তস্বল্পতা এবং ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা সমাধানেও ডিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও যাদের নিম্নরক্তচাপ আছে তাদের জন্য ডিম একটি অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য।
ডিমকে আমরা বিভিন্ন ভাবে খেতে পছন্দ করি।কেউ ভেজে, কেউ সিদ্ধ করে আবার কেউ মামলেট বানিয়ে খেতে পছন্দ করে।তবে ডিম অধিক ভেজে খেলে ডিমের মধ্যে থাকা অনেক পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই অর্ধসিদ্ধ ডিম খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
২০২০সালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ডিম দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল,” প্রতিদিন ডিম খান, ডিমের গুণ অপরিসীম।”
Post MIddle
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, পোল্ট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ এনিম্যাল হাজবেন্ড্রী সোসাইটি, পি ভেট এক্সিকিউটিভ সহ বিভিন্ন সংস্থা এই দিনটি গুরুত্বের সাথে পালন করে থাকে।
ডিম হচ্ছে সহজলভ্য প্রোটিন। কম খরচে সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস এটি। আমাদের সমাজে নিম্নবিত্ত মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ ডিম রাখছে অপরিসীম ভুমিকা। কম মূল্যে অধিক প্রোটিনের আধার ডিম ছাড়া আর কি বা হতে পারে। আমাদের দৈনিক প্রাণিজ প্রোটিনের চাহিদা পূরণে ডিম রাখছে অগ্রণী ভূমিকা।
একটা সময় আমাদের দেশ ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল না‌। তবে বর্তমানে আমাদের দেশ ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাহিদা পূরণে যতটুকু দরকার তার চেয়েও বেশি ডিম উৎপাদন হচ্ছে দেশে। খামারীরাও লাভবান হচ্ছেন এই পেশার মাধ্যমে। যার ফলে দেশের বেকারত্ব যেমন কমছে পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থানের পথ প্রশস্ত হয়েছে।
মাহফুজা হোসেনলেখক : মাহফুজা হোসেন 
শিক্ষার্থী,ইতিহাস বিভাগ ।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় । সদস্য, জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি ফিচার, কলাম এন্ড কন্টেন্ট রাইটার্স
পছন্দের আরো পোস্ট