যেভাবে জানলেন সাহিত্যে নোবেল জয়ের খবর
সাহিত্যে নোবেল পাওয়ার খবর ফোনে জানানো হয় তানজানিয়ার আবদুলরাজাক গুরনাহকে। কিন্তু এই সাহিত্যিক কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না বিষয়টি।ভেবেছিলেন হয়তো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি তাকে ফোন করেছেন। এ জন্য ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে তিনি ধমকের সুরে কথা বলেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবদুলরাজাক বলেন, মধ্যাহ্নভোজের কিছুক্ষণ আগের ঘটনা। আমি নিজের জন্য চা তৈরি করছিলাম। ঠিক সেই সময় ফোন বেজে ওঠে। ভাবলাম, কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি হবে হয়তো। ফোন ধরলাম। ওপাশ থেকে এক ব্যক্তি বললেন, হ্যালো, আপনি সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন। আমি বললাম, দূর হও! আমাকে একা থাকতে দাও।
পুরস্কার জেতার খবর পেয়ে কোনোমতে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। পুরস্কার তিনিই পেয়েছেন,পরে অবশ্য তাকে বিষয়টি বিশ্বাস করানো সম্ভব হয়েছে।
প্যারাডাইস নামে উপন্যাসের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ২০২১ পেয়েছেন তানজানিয়ার লেখক আবদুলরাজাক গুরনাহ। বৃহস্পতিবার সুইডিশ অ্যাকাডেমি নোবেল বিজেতা হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে।
আবদুলরাজাক গুরনাহর আপসহীন ও সহানুভূতিপূর্ণ লেখায় ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা আর শরণার্থীদের জীবনের নানা কষ্ট-ব্যঞ্জনার গল্প ফুটে উঠেছে।
আবদুলরাজাক গুরনাহ ১৯৪৮ সালে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জাঞ্জিবার দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন।১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে তিনি শরণার্থী হিসেবে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান।এখন পর্যন্ত তানজানিয়ার এই সাহিত্যিক ১০টি উপন্যাস এবং কয়েকটি ছোটগল্প লিখেছেন।শরণার্থীদের জীবনের পরতে পরতে যে ঘাত-প্রতিঘাত, তা তার লেখনীতে ফুটে ওঠে।
সাহিত্যে এখন পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ১১৮ জন, যাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ১৬ জন।
নোবেল কমিটির সদস্যদের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনার জেরে ২০১৮ সালে সাহিত্যের পুরস্কার স্থগিত করেছিল সুইডিশ অ্যাকাডেমি। পরে ২০১৯ সালে দুবারের নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।
২০১৮ সালের জন্য পোলিশ লেখক ওলগা টোকারচুক এবং পরের বছরের জন্য অস্ট্রিয়ার পেটার হান্টকরকে সাহিত্যের নোবেল দেওয়া হয়। গত বছর সাহিত্যের নোবেল পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কবি লুইস গ্লুক।