ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে উচ্চশিক্ষা

সাইফুল ইসলাম খান।

কোভিড-১৯ বিশ্বকে বদলে দিয়েছে। এই বদল হওয়া অব্যাহত থাকবে দীর্ঘ সময় ধরে। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বপর্যটনেও এর প্রভাব অনস্বীকার্য। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে ৫টি খাত ব্যাপকভাবে এবং বহুমাত্রিকতা নিয়ে আবির্ভূত হবে এবং অর্থনীতি ও সমাজ জীবনে গতির সঞ্চার করবে।

উল্লেখিত ৫টি খাতের একটি হচ্ছে ডোমেস্টিক ট্যুরিজম বা অভ্যন্তরীণ পর্যটন। এখানে যে দেশগুলোর সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি তারমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিব তার বিশেষ বার্তায় বলেছেন পর্যটন হবে কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে ঘুরে দাড়ানোর অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।

সুতরাং বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বেই পর্যটনকেন্দ্রিক পড়াশোনার কদর বাড়ছে হু হু করে। আপনার পছন্দ যদি হয় পর্যটন ও আতিথিয়তা, তাহলে চোখ বন্ধ করে ভর্তি হতে পারেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে।

কোথায় পড়বেন:

বাংলাদেশে বর্তমানে ৯টি সরকারী, ১৫ টি বেসরকারী এবং জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধীন ৮ টি কলেজে পর্যটন নিয়ে পড়ালেখা করার সুযোগ রয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। আধুনিক শিক্ষা কারিকুলাম, পর্যটন ভিত্তিক বিদেশী বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহনের সুযোগ এবং হাতে-কলমে প্রশিক্ষন ব্যবস্থার কারনে ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।

কেন পর্যটন, কেন ড্যাফোডিল:

‘পর্যটনের সাথে একান্তভাবে যে পড়াটির যোগসূত্র রয়েছে তা হলো হোটেল ম্যানেজমেন্ট। বলা যায় আগামীর পেশা পর্যটন ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট।’ এভাবেই কথা শুরু করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজন্টের সাবেক শিক্ষার্থী আবু সালেহ। তিনি কোর্স ওয়ার্ক শেষে এক বছরের জন্য পেমেন্ট সহ ইন্টার্নশিপ শেষ করে এসেছেন ’চিন দেশের হাইনান প্রদেশ’ থেকে। বর্তমানে নিজ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেশকিছু আন্তর্জাতিক চেইন হোটেল ব্যবসা শুরু করেছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেটেও বেশ কিছু চার তারকা ও পাঁচ তারকা হোটেল শুরু করেছে তাদের ব্যবসা। এসব হোটেলে প্রচুর দক্ষ কর্মীবাহিনী দরকার হচ্ছে। দেশের বাইরে তো সুযোগ আরও ব্যাপক।

বেকারত্ব বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের একটি প্রধানতম সমস্যা। প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেশনজটের কারণে বয়স বেড়ে যাওয়া এই অঞ্চলের কর্মপ্রার্থীদের জন্য এক জীবন মরণ সমস্যা। বিশেষ করে এই করোনা কালে বেশীর ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তা আরও মারাত্মক আকার ধারন করেছে।

তুলনামূলক দ্রুত কর্মসংস্থানের জন্য হোটেল ম্যানেজমেন্ট ক্ষেত্রটি সেক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে এবং এরই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশ সেরা অনলাইন শিক্ষা মাধ্যম, (BLC Platform for Online Education) এখন যা ড্যাফোডিলের গর্ব এবং শিক্ষার্থীর একটি দিনও যেখানে নষ্ট হয়না। বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্যান প্যাসিফিক সোনার গাও, দ্যা ওয়েষ্টিন, রেনেসাস, বিমান হলিডে সহ পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত রয়েছে।

এ ছাড়াও একশ একরেরও বেশী জায়গা নিয়ে অবস্থিত বেসরকারী ক্ষাতে দেশের সর্ববৃহৎ পর্যটন বান্ধব ক্যাম্পাসে পড়াশুনার পাশাপাশি পাচ্ছে কাজের সুযোগ, যা একজন ছাত্রকে করছে কর্মঠ এবং দক্ষ, পর্যটন খাতে যার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশী।

Post MIddle

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কোর্স কারিকুলাম একটু ভিন্নভাবে সাজানো।জানালেন এই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহবুব পারভেজ। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের চার বছরের শিক্ষাজীবনকে আমরা চারটি সেগমেন্টে ভাগ করেছি। প্রথম সেগমেন্ট হচ্ছে নিয়মিত কোর্সের আওতাধীন পড়াশোনা, দ্বিতীয় সেগমেন্ট হচ্ছে কো-কারিকুলাম বা সহশিক্ষা কার্যক্রম, তৃতীয় সেগমেন্ট ল্যাব ও অন এডুকেশন ট্রেনিং এবং চতুর্থ সেগমেন্ট হচ্ছে ক্যারিয়ার। এই চারটি সেগমেন্টের ভেতর দিয়ে একজন শিক্ষার্থীকে স্নাতক সম্পন্ন করতে হয় বলে তার পক্ষে কর্মজীবনের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ রূপে গড়ে ওঠা ছাড়া বিকল্প থাকে না। আর এসব কারণেই ড্যাফোডিলের ট্যুরিজম বিভাগে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়।

বিভাগীয় প্রধানের কথার সঙ্গে মিল পাওয়া গেল শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের। নাবিলা আক্তার এ বিভাগ থেকে পড়াশুনা শেষ করে চাকুরী করেছেন একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, আমাদের বিভাগের নিজস্ব হাউজ কিপিং ল্যাব রয়েছে এবং সার্ভিস ল্যাব রয়েছে। ফলে পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছি।

আরেক সাবেক শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, দুই বছর পর অন এডুকেশন পোগ্রামের মাধ্যমে আমাদেরকে কোনো না কোনো হোটেল, রিসোর্ট কিংবা পর্যটন প্রতিষ্ঠানে চার মাসের জন্য ইন্টার্নশীপ করতে হয়েছে। এছাড়া চার বছর পর পূর্ণাঙ্গ ইন্টার্নশীপ তো আছেই।

কথা হয় আরেকজন সাবেক শিক্ষার্থী তানিয়া সুলতানার সঙ্গে। তিনি বলেন, এখানে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের নেতৃত্বগুণ ও নানা বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। সবচেয়ে বড় সুযোগ হচ্ছে, শিক্ষার্থী বিনিময় প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বছরই দেশের বাইরের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।

তাছাড়া ছাত্রাবস্থাতেই আমরা এয়ার টিকেটিং সফটওয়্যার ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছি। এসব কারণই আমাকে এখানে ভর্তি হতে অকৃষ্ট করেছে।

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটিশিক্ষার্থী বিনিময় প্রকল্প:

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রয়েছে শিক্ষার্থী বিনিময় প্রকল্প শীর্ষক সমঝোতা চুক্তি। এই প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বেশ ক’জন শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক টাইওয়ান, লেবানন ও ফিলিপাইনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে এসেছেন। প্রতি বছরই এই বিভাগের কোনো না কোনো শিক্ষার্থী বিদেশের কোনো না কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান।

ভর্তির যাবতীয় তথ্য:

ভর্তির যাবতীয় তথ্য পেতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ৪/২ সোবাহানবাগ, ধানমন্ডি,ঢাকা অথবা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি. আশুলিয়া এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন।অনলাইনেও ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রয়োজনীয় টেলিফোন নাম্বার সমূহঃ ৪৮১১১৬৩৯, ৪৮১১৭১১৫, ৪৮১১৩৬৯০-৯১ বর্ধিতঃ ৪৪৪, ৫৫৫।মোবাইলঃ০১৭১৩৪৯৩০৫০-১,০১৮৪১৪৯৩০৫০,০১৭১৩৪৯৩১৪১।

ইমেইলঃ admission@daffodilvarsity.edu.bd ওয়েব: www.daffodilvarsity.edu.bd

পছন্দের আরো পোস্ট