খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

খুবি প্রতিনিধি।

আগামীকাল ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। একই সাথে এবছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমের তিনদশক পূর্তি। করোনা মহামারীর কারণে ব্যাপক আয়োজন সম্ভব না হলেও সীমিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি এবং একই সাথে তিনদশক পূর্তি উদযাপনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০-৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

এর পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে বঙ্গমাতা এর স্মৃতি স্মারক ‘মহীয়সী বঙ্গমাতা’ ম্যুরাল উদ্বোধন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও এক দশক পূতি উপলক্ষ্যে বেলা ১১টায় ওয়েবিনারে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে। ওয়েবিনারে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, এমপি প্রধান অতিথি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ও ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। এ ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও মন্দিরে প্রার্থনা। ক্যাম্পাসের মেইন গেট, রাস্তা, শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনে আলোকসজ্জারও আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও শিক্ষাকার্যক্রমের তিনদশক পূর্তি উপলক্ষে উপাচার্যের শুভেচ্ছা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও শিক্ষাকার্যক্রমের তিনদশক পূর্তি উপলক্ষে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাউপমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব, ইউজিসির চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিক, দেশবাসীসহ খুলনার সর্বস্তরের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, নিরবিচ্ছিন্নভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষাকার্যক্রমের ৩০ বছর পূর্তি নিঃসন্দেহে দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ অর্জন ও গৌরবের বিষয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে অমিত সম্ভাবনা। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদেরকে অতীতের অভিজ্ঞতায় বর্তমানের প্রচেষ্টায় আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

Post MIddle

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি কোয়ালিটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মানোন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির দিকে জোর দিয়েছি। গত ১০ বছর বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত আনুকূল্যে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দে বিভিন্ন উন্নয়ন অবকাঠামো বাস্তবায়নের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গতার পথে রয়েছে।

চলতি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২০২২-২৩ সালের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যমত শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পূর্ণাঙ্গরূপ পরিগ্রহ করবে। তবে আগামী ৫০ বা ১০০ বছরের প্রয়োজন ও চাহিদার নিরিখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে। আমরা এ লক্ষ্যে ক্যাম্পাস সংলগ্ন ২০৩ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা তৈরি করছি। এই জমি পাওয়া গেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আগামী একশ বছর নির্বিঘেœ বিকাশ লাভ করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে উন্নয়নের নতুন দিক-নির্দেশনা দিতে হবে- এ বিষয়টি ধারণ করেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অভীষ্ট্য লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

এবছর করোনা মহামারীর কারণে তিনদশক পূর্তি ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস জাকজমকভাবে পালন সম্ভব হচ্ছে না। এ অপরিতৃপ্তি ভবিষ্যতে চারদশক পূর্তি বা সুবর্ণজয়ন্তীতে পূরণ হবে সে প্রত্যাশা করি। তিনি আরও বলেন, এই সময়ে শিক্ষা গবেষণাসহ বিভিন্ন দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুদৃঢ় ভিত্তি রচিত হয়েছে তা আগামী দিনের সাফল্যের সোপান বেয়ে সামনে এগিয়ে যেতে আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে ৩০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে এটাই প্রত্যাশা।

উপ-উপাচার্যের শুভেচ্ছা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও শিক্ষাকার্যক্রমের তিনদশক পূর্তি উপলক্ষে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এক শুভেচ্ছা বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এতদাঞ্চলের মানুষের আন্দোলন সংগ্রামের ফসল। সঙ্গত কারণেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মানুষের আশা-আকাঙ্খা অনেক বেশি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সে বিষয়টি ধারণ করেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমের তিনদশক পূর্তি নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় অর্জন।

এই অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং খুলনার রাজনীতিক, প্রশাসন, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বসাধারণ অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভূমিকা পালন করেছেন। আমি তাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আগামী দিনেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এই সাফল্যের ধারা অব্যহত রেখে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে সে প্রত্যাশা করি।

পছন্দের আরো পোস্ট