পরিশ্রম ও ধৈর্য সাফল্যের মূল চাবিকাঠি

মোবাশ্বেরা ওহী।

সফলতার এক নাম পরিশ্রম, অপর নাম ধৈর্য। দুটি শব্দের মাঝে অর্থের পার্থক্য থাকলেও এই দুটি শব্দের সমন্বয়ে যার পরিচিতি পাওয়া যায় নিঃসন্দেহে তার নাম সফলতা। পরিশ্রম কিংবা ধৈর্য কোনোটি ছাড়াই সফলতার নাম উচ্চারণ করা সহজ নয়। সুতরাং,চোখ বন্ধ করে বলা চলে পরিশ্রম এবং ধৈর্য সাফল্যের সরাসরি দ্বার উন্মোচনে সহায়ক।

মানুষ স্বপ্নবিলাসী; কারণে-অকারণে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। স্বপ্নে সে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যেতেও দ্বিধান্বিত হয় না। কিন্তু সে স্বপ্ন যদি হয় সত্যিকার অর্থে পাবার ইচ্ছা, তাহলে অবশ্যই তাকে অধ্যবসায়ী হতে হবে। হতে হবে পরিশ্রমী ও ধৈর্যশীল।

বিনা পরিশ্রমে সফলতা প্রায় অসম্ভব। কিছু অসাধু মানুষ হয়তো বিনা পরিশ্রমে কিংবা সামান্য কিছু পরিশ্রমে দীর্ঘসময়ের জন্য সফলতাকে কিনে নিতে পারে কিন্তু বাস্তব সফলতা পেতে দরকার সঠিক এবং কঠোর পরিশ্রম। আবার শুধু পরিশ্রম করেই তাড়াহুড়োয় সফলতা পাওয়া যায় না। পরিশ্রমের ফল পেতে হলে ধৈর্য ধারণ করতে হয়। ধৈর্যহারা হলে সফলতাকে অনুভব করা কষ্টকর। অনেকেই কঠোর পরিশ্রম করে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। এটা যেমনি স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এক প্রকার বাঁধা সৃষ্টি করে, তেমনি জীবনের প্রতি অতৃপ্তি নিয়ে আসারও একটি প্রক্রিয়া। আর তাই অনেকেই ধৈর্যহারা হয়ে আতœহুতির পথ বেছে নেয়। তাই ধৈর্যকে সঙ্গী করে পথ চলা আবশ্যক।

Post MIddle

দক্ষতা, কাজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত; এসব কিছুই কোনো কাজে সফলতা অর্জনের পিছনে অনেকটা পথ সুগম করে। কিন্তু এইসব কিছু বাস্তবায়নের পিছনে থাকে অপার ধৈর্য এবং অকথিত পরিশ্রম। সতেরো শতকের ইংরেজ কবি ও নাট্যকার যথার্থই বলেছেন, ‘ধৈর্যশীল মানুষের জেদ খুব ভয়ঙ্কর জিনিস।’ কারণ একজন ধৈর্যশীল মানুষ সফলতাকে সহজে ছিনিয়ে নিতে জানে। হঠাত উঁকিঝুঁকি দিয়ে আসা ব্যর্থতা তার কাছে কিছুই নয়, বরং নতুন করে উঠে দাঁড়ানোর একটি টনিক মাত্র। কারণ, সে ধৈর্য ধরতে জানে। সফলতাকে এক দু’বার হারালেও সে ধৈর্য নিয়ে ব্যর্থ হওয়া কাজটিকে আবার উঁচু করে তুলে ধরতে পারে। তার এই ধৈর্য ধারণের পিছনে থাকে অনেক পরিশ্রম ও সাধনা।

কারো কারো ক্ষেত্রে পেশা ও নেশা এক হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে তার কাজটির প্রতি পূর্ণ ধ্যান ও জ্ঞান থাকে। তাই সে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে কাজটি সম্পূর্ণ করার সুযোগ গ্রহণ করে বলে সফলতাকে হাতের কাছে দেখতে পায়। যার পিছনের গল্পে লেপ্টে থাকে ‘ধৈর্য’ ও ‘পরিশ্রম’ নামের দুটি শব্দ। কিন্তু নেশা ও পেশা ভিন্ন হলে সফলতাকে আঁকড়ে ধরা কিছুটা কঠিন হলেও প্রকৃত পরিশ্রম, সঠিক পরিকল্পনা এবং সবশেষে ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে গেলেই সফলতা সম্ভব।

জীবনে সফল হতে মানুষ কতো কিছুই না করে। স্বপ্নের রাজ্যে গড়ে তোলা সব স্বপ্ন পূরণ করতে পাড়ি দিতে পারে অনেকটা বন্ধুর পথ।ধৈর্যের সাথে পরিশ্রম করে অসংখ্য মানুষ পৃথিবীতে উদাহরণ হয়ে আছে বেঁচে আছে। তাই সফলতা পেতে হলে অবশ্যই কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। কঠিন সময়েও হতে হবে কাজের প্রতি মনোযোগী এবং কঠোর। তাইতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘নির্দয় হবে না; কিন্তু কর্তব্যের বেলায় নির্মম হতে হবে।’ তাই, সফল হতে চাইলে ধৈর্যসহকারে সর্বোচ্চ চেষ্টা ও পরিশ্রম উজাড় করে দেয়া উচিত। সবশেষে সৃষ্টিকর্তা নিজেই সফলতার সাথে সাক্ষাত করাবেন।

পছন্দের আরো পোস্ট