![নিজ মহিমায় উজ্জ্বল ৫ জয়িতা](https://lekhapora24.net/wp-content/uploads/2020/10/Morrelgonj-photo-26.10.2020-750x230.jpg)
নিজ নিজ মহিমায় উজ্জ্বল ৫ জয়িতা
মেহেদী হাসান লিপন, মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট)সংবাদদাতা ।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার সফল জননী হিসেবে তহমিনা বেগম, সমাজ উন্নয়নে ফাহিমা খানম, অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী হিসেবে সাবিহা আক্তার , নির্যাতনের বিভিষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী হেলেনা বেগম ও শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাদিয়া আকতার শিমু নিজ নিজ অবস্থানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে সাক্ষম হয়েছেন। পেয়েছেন জয়িতার সম্মান।
সফল জননী হিসেবে তহমিনা বেগম (৬২)। উপজেলার সোনাখালী গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী। ৫ শ্রেণী পাশ। ৪ সন্তানের জননী। পেয়েছেন জয়িতার সম্মাননা। স্বামীর নিদিষ্ট কোন আয় ছিলনা। তারপরও নিজের অদম্য ইচ্ছা আর নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে ৪ সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন।
এখন তার ৪ সন্তানই সরকারি চাকুরীজীবি। প্রথম সন্তান মো. শাহ আলম উপ-পুলিশ পরিদর্শক, হাবিবুর রহমান সার্জেন্ট, আবুল হাসান কনষ্টবল , ছোট ছেলে আরিফুর ইসলাম সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক।
![Post MIddle](https://lekhapora24.net/wp-content/uploads/2022/03/920X80.gif)
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা খানম। তিনি বঞ্চিত নিগৃহীত অসহায় মহিলাদের যৌতুক, বাল্য বিবাহ , নারী ও শিশু নির্যাতন ,পাচার রোধ, মহিলাদের স্বাস্থ্য সম্মত জবিন যাপনে উদ্ধুদ্ধকরণ , মেয়েদের স্কুলে যেতে উৎসাহিত করতে বিশেষ অবদান রেখেছেন। নারী সমাজের সমাজ এ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য পেয়েছেন জয়িতার সম্মান।
শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী হিসেবে সম্মাননা পেয়েছেন সাদিয়া আক্তার শিমু। পৌর সদরের উত্তর সরালিয়া গ্রামের মৃত.হোসেন আলী তালুকদারের কন্যা। পিতা ছিলেন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ৫ ভাই-বোন নিয়ে আর্থিক সংকটে সংসার চাকা ছিল প্রায় অচল। ৩য় শ্রেণীতে পড়াশুনাকালীন তার পিতা মারা যায়। তারপরও নিজের অদম্য ইচ্ছায় তিনি বিবিএ পাশ করে এলএলবি অধ্যয়নরত। বর্তমানে একটি এনজিওতে ফাইন্যান্স বিভাগে চাকুরী করছে। সংসারের হাল ধরেছেন।
পারিবারিকভাবে নানা নির্যাতনের বিভিষিকাময় জীবন মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করে জীবনে সফলতা পেয়েছেন হেলেনা বেগম। পেয়েছেন জয়িতার সম্মাননা। বারইখালী ২নং ওয়ার্ডের মোকলেছ আলী হাওলদারের কন্যা হেলেনা বেগম। ৫ ভাই-বোন আর অভাব অনটনের সংসারের বোঝা নিয়ে পিতা বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের পরও স্বামীর সংসারে নুন আনতে পানতা ফুরায়। যৌতুকের কারনে স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে শিকার হন। স্ত্রী সন্তান ফেলে চলে যায় স্বামী। যার কারনে আর্থিক ও সামাজিক সংকটে পড়ে যায় হেলেনা বেগম। ঝি এর কাজ,কৃষাণীর কাজ, কাঁথা সেলাই করে ৪ সন্তানকে লেখাপড়া করান। বড় ছেলে কম্পিউটারে ডিপ্লোম পাশ, মেঝ ছেলে অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র, সেজো ছেলে অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র, ছোট ছেলে হেফজ বিভাগে পড়াশুনা করছে।
অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে জয়তীর সম্মাননা পেয়েছেন সাবিহা আক্তার মিনা। খালকুলা গ্রামের আবুল কাসেমের কন্যা। বাবা-মার ৬ষ্ঠ সন্তান সে। আর্থিক অভাব অনটন মধ্যে এসএসসি পাম করেন। ১৯৯৯ সালে বিয়ে হয়। স্বামীও বেকার। তারপরও লেখাপড়ার ইচ্ছা পূরণ ও অদম্যতা নিয়ে মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউশন থেকে আধুনিক গামেন্টস ও বিউটিফিকেশনের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। দোকান ভাড়া নিয়ে মহিলাদের পোষাক তৈরীর ব্যবসা শুরু করেন। সন্তান না হওয়ায় স্বামীর সাথে ডিভোর্স হয়। এরপরও তিনি কঠোর পরিশ্রম করে এখন অর্থনৈতিকভাবে এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।##