অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম ও বাস্তবতা
সৈয়দা মুনিয়া জান্নাত।
মহামারী এসেছে একদিকে অন্যদিকে জীবনযাত্রার সাথে শিক্ষা ব্যবস্থাতে নেমে এসেছে পাহাড়সমান ধস। কোনোভাবেই উপকারে আসছে বলে মনে হচ্ছেনা ডিজিটাল এ শিক্ষা কার্যক্রম।সহজভাবে যদি বলি, “প্রাণহীন আজ প্রিয় শিক্ষা কার্যক্রম”।
৮০% শিক্ষার্থীই অনলাইনের পেইনফুল এ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে।কারন,খুব বেশি প্রেশার দেওয়া হচ্ছে যার ফলে লেখাপড়াতে ইন্টারেস্ট উঠে যাচ্ছে,আগ্রহ নিয়ে ছাত্র ছাত্রীরা পড়তে বসছেনা। বিষন্নতার অতল তলে তলিয়ে যাচ্ছে কারন ,বাংলাদেশের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীরা এখনো অনলাইনের সিস্টেমের সাথেই খাপ খাওয়াতে পারছেনা।
দেখা যায় লোডশেডিং হলে বা নেটের স্পিড কম হলেই ফ্যাকাল্টিদের টাইমমতো ডকুমেন্টস গুলো সাবমিট করা যাচ্ছেনা,এতে যেমন দুশ্চিন্তা আঁকড়ে ধরে ঠিক তেমনই মন মেজাজ খারাপ হয়,কারন যথাসময়ে সবকিছু সাবমিট না করলে শিক্ষকদের মনে সন্দেহ কাজ করে যে কপি পেস্ট করছে কিনা !
আবার অনেক অসৎ শিক্ষার্থী সুযোগ কাজে লাগিয়ে রেজাল্ট ও ভালো করছে,দেখা যাচ্ছে কিছু ইউনিভার্সিটিতে যারা পাশ করতে পারতোনা তারা ভালো রেজাল্ট করছে।এতে যারা সৎ শিক্ষার্থী,মেধাবী,নকল করেনি কখনোই তারা হতাশার স্রোতে ভাসছে কারন অসীম পরিশ্রম করেও তারা আশানুরূপ ফল পাচ্ছেনা ! টেকনিক্যাল সমস্যা তোহ আছেই আরো নানা কিছু দায়ী রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পিছনে ভালো শিক্ষার্থীদের ।
সবচাইতে চিন্তার বিষয় হচ্ছে,এই অসৎ উপায় অবলম্বন করে যারা ভালো রেজাল্ট করে বের হবে তারা যদি বড় বড় প্রতিষ্ঠানে রেফারেন্স এ ঢুকে তবে দেশের কি হবে ! আসলে অনিশ্চয়তার ভয়াবহ স্রোতে ভাসছে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ।এভাবে চলতে থাকলে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে শিক্ষার আলোকিত জগৎ ।
তাছাড়া,একটানা ক্লাস করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে।পাগলা ঘোড়ার মতো লাগামহীন ভাবে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে সীমাহীন এসাইনমেন্ট,প্রজেক্ট ওয়ার্ক,টার্ম পেপার,ভাইভ ,কুইজ,ভাইভা,রিসার্চ পেপার,পরীক্ষা তো আছেই ।
আসলে কুলিয়ে উঠতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা। মারাত্মক প্রেশারে শিক্ষার্থী অনেকের রাতের ঘুম হারাম। এতে দেখা যায় পরিবারের মানুষের সাথেও ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও দুর্ব্যবহার করে ফেলছে।আসলে মানসিক প্রশান্তির অভাবে মাথা ঠিক রাখা যাচ্ছেনা ।
অনলাইনের এ দমবন্ধকর শিক্ষাকার্যক্রম থেকে মুক্তি চায় শিক্ষার্থীরা।বিষয়টা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার অনুরোধ রইলো।উপকারের বদলে ক্ষতির দিকে ধাবমান হচ্ছে অনেকে।অনলাইনের সাথে তাল মিলাতে না পেরে সেমিস্টার ড্রপ দিয়ে নিজের ক্ষতি করছে অনেকে কারন,একটাই ভয় সিস্টেম না বুঝে এগিয়ে যদি রেজাল্ট খারাপ হয় ! শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত সমাধান চায় এ মানসিক অশান্তির ।
সৈয়দা মুনিয়া জান্নাত
MA in Applied Linguistics & ELT in East West University