আলট্রাসাউন্ড শনাক্ত করার ক্ষুদ্রতম প্রযুক্তি উদ্ভাবন

লেখাপড়া ডেস্ক।

মানুষের চুলের চেয়ে শতগুণ পাতলা আলট্রাসাউন্ড শনাক্তকরণ যন্ত্র তৈরি করার কথা দাবি করেছেন জার্মানির বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম আলট্রাসাউন্ড শনাক্তকরণ যন্ত্র।

আগে যেসব ক্ষুদ্র উপাদান বা কোষ দেখা অসম্ভব ছিল, এ যন্ত্র তা দেখাতে সক্ষম হবে। গবেষণা খাতে এ উন্নতির ফলে কোষ এবং এর উপকরণগুলোর সূক্ষ্ম বিষয়গুলো এখন ভালোভাবে গবেষণা করা যাবে।

সম্প্রতি ‘নেচার’ সাময়িকীতে এই গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

Post MIddle

জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল হেলথের গবেষকেদের তথ্য অনুযায়ী, আলট্রাসাউন্ড শনাক্তকরণে অনেক দিন ধরেই পিজোইলেকট্রিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে শব্দ তরঙ্গের চাপকে বৈদ্যুতিক ভোল্টেজে রূপান্তর করে। এ প্রক্রিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে যে ইমেজ রেজল্যুশন পাওয়া যায়, তা নির্ভর করে কোন আকারের পিজোইলেকট্রিক শনাক্তকরণ যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপর।

এতে আকার কমানো হলে উচ্চ রেজল্যুশন পাওয়া যায়। তবে পিজোইলেকট্রিক শনাক্তকরণ যন্ত্রের আকার বেশি ছোট হয়ে গেলে তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কারণ, একপর্যায়ে পিজোইলেকট্রিকের সংবেদনশীলতা কাজ করে না। এতে প্রায়োগিক দিক থেকে এটি অকার্যকর বলে গণ্য করা হয়।

গবেষকেরা নতুন যে পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, তাকে বলা হচ্ছে সিলিকন ওয়েভগাইড-ইলাটন ডিটেক্টর বা এসডব্লিউইডি। এতে সিলিকন ফোটোনিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপটিক্যাল যন্ত্রাংশকে ক্ষুদ্রতম রূপ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সিলিকন চিপের ক্ষুদ্রতম পৃষ্ঠে ঘন করে এ সন্নিবেশ করা হয়।

গবেষকেরা বলেন, সিলিকন কোনো পিজোইলেকট্রিসিটি প্রদর্শন করে না। তবে অপটিক্যাল তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে ক্ষুদ্র আকারে আলো আবদ্ধ রাখার যে সক্ষমতা দেখায়, তা ক্ষুদ্র ফোটোনিক সার্কিট তৈরিতে প্রয়োগ করা যেতে পারে। তারা এসডব্লিউইডি তৈরিতে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন।

গবেষণা নিবন্ধের সহযোগী লেখক ও এসডব্লিউইডির উন্নয়নকারী রামি স্নেইডারম্যান বলেন, মানুষের রক্তকোষের চেয়েও ক্ষুদ্র আকারের একটি শনাক্তকরণ যন্ত্র প্রথমবারের মতো তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, যা সিলিকন ফটোনিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে আলট্রাসাউন্ড শনাক্ত করতে সক্ষম।

গবেষকেদের তথ্য অনুযায়ী, পিজোইলেকট্রিক শনাক্তকরণ যন্ত্রকে যদি এসডব্লিউইডি স্তরে নামানো হয়, তবে কয়েক কোটি গুণ সংবেদনশীলতা হারাবে।

গবেষক দলের প্রধান ভাসিলিস এনটিজিয়াক্রিস্টোস বলেন, ‘সিলিকন ফটোনিক্স ব্যবহার করে নতুন যন্ত্রের ক্ষেত্রে উচ্চ সংবেদনশীলতা ঠিক রেখে যে পর্যায়ে যন্ত্রটিকে ছোট করা গেছে, তা অবিশ্বাস্য। আমরা এ প্রযুক্তির প্রতিটি দিক নিখুঁত করার চেষ্টা চালিয়ে যাব। সহজে বহনযোগ্য যন্ত্র ও এন্ডোস্কোপের ক্ষেত্রে যন্ত্রটি কাজে লাগানোর চেষ্টা চালিয়ে যাব।

গবেষকেরা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা ও গবেষণায় এর ব্যবহারের কথা বললেও নতুন প্রযুক্তি শিল্প খাতেও ব্যাপক আকারে ব্যবহৃত হতে পারে।# সূত্র: প্রথম আলো।

পছন্দের আরো পোস্ট