ইউজিসিতে প্রায় ৩ হাজার অসচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা
জবি প্রতিনিধি।
ইউজিসির স্মার্টফোন সহায়তার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এর প্রায় ৩০০০ হাজার অসচ্ছল শিক্ষার্থীর তালিকা পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর, ২০২০) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান লেখাপড়া প্রতিবেদককে মুঠোফোনে এসব তথ্য জানান।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালসমূহ দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এ অনাকাক্ষিত অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করার অভিপ্রায়ে ২৫ জুন ২০২০ তারিখ কমিশন এবং উপাচার্য মহোদয়গণের মধ্যে Zoom Cloud-এ এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্যগণের মতামতের ভিত্তিতে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রমে যাতে সকল শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারে, সে লক্ষ্যে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধাসহ শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডাটা সরবরাহ এবং Soft loan/Grants-এর আওতায় Smartphone সুবিধার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য কমিশন থেকে শিক্ষামন্ত্রীর বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়।
Online শিক্ষাকার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যে সকল শিক্ষার্থীর ডিভাইস ক্রয়ে আর্থিক সক্ষমতা নেই, শুধুমাত্র সে সকল শিক্ষার্থীর নির্ভুল তালিকা ২৫ আগস্ট ২০২০ তারিখের মধ্যে বন্ধনিতে উদ্ধৃত (director_publicuniv@ugc.gov. bd) ই-মেইল-এ প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান ও ডেপুটি রেজিস্টার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মশিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (১৭ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রমে সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যে সকল শিক্ষার্থীর ডিভাইস ক্রয়ে আর্থিক সক্ষমতা নেই, শুধুমাত্র সে সকল শিক্ষার্থীর নির্ভুল তালিকা ২০/০৮/২০২০ তারিখের মধ্যে স্ব স্ব ডিপার্টমেন্ট/ইনস্টিটিউট চেয়ারম্যানকে রেজিস্ট্রার দপ্তর বরাবর প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান মুঠোফোন আলাপে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র তালিকা তৈরি করেছে। সে তালিকা সরকারের কাছে যাবে কি যাবে সেটাও তাদের জানা নেই। ইউজিসি তালিকার পাঠিয়েছে সেটা পাঠানো হচ্ছে মূল কথা। ডাটা সুবিধা, সফট লোন বা স্মার্টফোন কে কি পাবে তা এখন পরিষ্কার ভাবে জানা যায় নি। সকল বিভাগ থেকে তালিকা পাঠানোর পর আমরা তা একত্রে করে ইউজিসিতে পাঠিয়ে দিয়েছি। ইউজিসি ও শিক্ষার্থীদের কি দেয়া হবে, কবে দেয়া হবে বা কতজনকে দেয়া হবে এ ব্যাপারে এখনও কিছু জানায় নি।
ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, স্মার্টফোন কেনার জন্য লোন দেয়ার প্রক্রিয়াটির কাজ চলছে। আমরা ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর কাছে তালিকা চেয়েছি। তাদের অনেকের কাছ থেকেই আমরা সাড়া পেয়েছি। স্মার্টফোন কেনার জন্য লোনের প্রক্রিয়াটি জানতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে আলাপ করেছি। ফান্ডের ব্যাপারে ইতিমধ্যে আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সাথেও কথা বলেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেপ্টেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাবে। এরপর ইউজিসির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে গেলেই সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে শিক্ষার্থীদের হাতে স্মার্টফোন পৌঁছে যাবে। বিষয়টির সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগমকে। বিস্তারিত জানতে তাঁর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন ইউজিসি চেয়ারম্যান।
স্মার্টফোন কেনার জন্য লোন ও আনুষাঙ্গিক বিষয়ে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর এমন শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়েছি যাদের ডিভাইস নেই বা কেনার সামর্থ্য ও নেই। লোনের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের জানাবে এবং সেটা কি প্রক্রিয়ায় দেয়া সেটাও তারা জানিয়ে দিবে। এরপর ইউজিসি মিটিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবে।