ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস পালিত
ঢাবি প্রতিনিধি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি, সমাজনীতি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের অনন্য বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে বলেছেন, তিনি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমতা ও গণতান্ত্রিক সমাজ গঠন করতে চেয়েছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধু আজও সমকালীন ও প্রাসঙ্গিক। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তিনি যুগ যুগ ধরে অনুুপ্রেরনার উৎস হয়ে থাকবেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আজ (১৫ আগস্ট ২০২০) শনিবার প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাবি শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাসানসহ কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সভায় প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সাবেক ছাত্রনেতা শেখ শহিদুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন। আলোচনা সভার প্রারম্ভে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া এই প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: এনামউজ্জামান অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমনের কথা ছিল। সেদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা হয় নি। এর আগেই ঘাতকের নির্মম বুলেটে তাঁকে সপরিবারে শাহাদত বরণ করতে হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিচ এন্ড লিবার্টি’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু গণমানুষকে বুঝতেন। শৈশব থেকেই তিনি মনোজগতকে আলোকিত করতে পেরেছিলেন। তখন থেকেই তিনি গরীব, দুঃখী ও মেহনতি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সাবেক ছাত্রনেতা শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু নেই কিন্তু তাঁর অস্তিত্ব আমরা সবসময় অনুভব করি। তিনি রাজনীতিকে সাধরন মানুষের কাছে পৌঁছে দেন। তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা ও মানবকল্যাণে আত্মত্যাগের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবন ও হলসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
এছাড়া, বাদ যোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ প্রত্যেক হল ও আবাসিক এলাকার মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।