জবির মার্কেটিং বিভাগের ১৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনলাইন সেমিনার

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ, জবি প্রতিনিধিঃ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) মার্কেটিং বিভাগের ১৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি অনলাইন সেমিনারের অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ জুলাই, ২০২০) সকাল ১১ টায় বিভাগীয় উদ্যোগে মার্কেটিং ক্লাব ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় জুম মিটিং ও ফেইসবুক লাইভ এর মাধ্যমে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়।

 

মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। সেমিনারে বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দরাও উপস্থিত ছিলেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, মূলত প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথেই উৎপাদন ব্যবস্থায় গতি আসে কিন্তু দেখা যায় যে যত সহজে প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো যায় তত সহজে বাজারে তা বিক্রি করা যায় না। তখনই মার্কেটিং গুরুত্ব পেতে শুরু করে। আর আধুনিক মার্কেটিং এর যাত্রা শুরু হয় তখনই যখন উপলব্ধি করা হয় যে উৎপাদনের পরে নয় বরং এর আগেই মার্কেটিং প্রসেস এর প্রয়োজন। মার্কেটিং এর মূলত দুইটি দিক থাকে- ফিলোসফিক্যাল ও টেকনোলজিকাল। একটি অর্গানাইজেশন এর ক্ষেত্রে প্রথমত ইন্টারনাল মার্কেটিং এবং তারপর এক্সটার্নাল মার্কেটিং এর দিকে নজর দিতে হবে,মূলত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া হবে কাস্টমার কে কেন্দ্রে রেখেই।

 

Post MIddle

বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, সৃজনশীল হতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে জ্ঞান চর্চা করতে হবে৷ যে জ্ঞান চর্চার পিছনে কোনো নির্দিষ্ট উদ্দ্যেশ্য থাকে সে জ্ঞান দিয়ে টিকে থাকা যাবে না। শুধু ভালো ফলাফল অর্জন করা যাবে৷ মার্কেটিং ক্ষেত্রে ভালো করতে হলে জানতে হবে অন্যান্য বিষয় সম্পর্কেও। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সামাজিক বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, দর্শন এর মত বিষয়সহ অন্য সব বিষয়ে রাখতে হবে সমান ভাবে ধারণা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, প্রশাসন, উন্নয়ন কর্মকান্ড সহ সর্বক্ষেত্রে মার্কেটিং দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। অর্থ্যাৎ Marketing Everywhere /Marketing Everything কন্সেপ্ট টা চালু করতে হবে।

সেমিনারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সনামধন্য চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.মোঃ হুমায়ুন কবীর চৌধুরী বলেন, যেটুকু সময় আছে সেটা যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য যে সকল টেকনোলজি গুলো আপনাকে জানতে হবে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত জ্ঞানের সাথে ঐ সকল টেকনোলজির লিংক খোঁজার চেষ্টা করুন। এই কাজটুকু আপনি যদি এখন অবসর সময়ে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন সময়ে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে পারেন তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আপনার সফলতা আসবেই। আর যদি এই কাজে এক মিনিট দেরি করেন তবে আপনি এক মিনিট পিছিয়ে যাবেন। আমি আপনাদের মঙ্গলকামনা করছি।

 

সেমিনার সম্পর্কে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মেহেদী হাসান রাব্বি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যখন দেশের সমস্ত শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আমরা এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছিলাম তখন একই সাথে বদলে যাচ্ছিলো দেশের বিপণন ব্যবস্থাও। তখনই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ চারটি ধারাবাহিক সেমিনার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়। যার মাধ্যমে আমরা বদলে যাওয়া পৃথিবীতে বিপণন ব্যবস্থায় কি ধরনের পরিবর্তন আসবে এবং সেই পরিবর্তিত বিপণন ব্যবস্থায় কিভাবে একজন বিপণন কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে সে ব্যাপারে বিস্তার ধারণা লাভ করতে পেরেছি। এছাড়াও বদলে যাওয়া পৃথিবীতে কিভাবে নিজের বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্জিত জ্ঞানকে পরিপূর্ণ ভাবে বাস্তবিক রুপদান করা যাবে সে ব্যাপারেও সেমিনার গুলোতে সম্মানিত বক্তাগণ বিশেষ ভাবে আলোকপাত করেন। এই জন্য আমি আমার মার্কেটিং বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর চৌধুরী স্যার এবং বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

 

উল্লেখ্য যে, সেমিনারটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ আয়োজন করেছে। সেমিনারটি পরিচালনায় সার্বিক সহযোগীতায় ছিল মার্কেটিং ক্লাব এবং বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। উক্ত সেমিনারে মার্কেটিং এর অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষার্থীদের করণীয় দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়।

পছন্দের আরো পোস্ট