আজও বাতাসে লাশের গন্ধ
শিউলী আক্তার
১৯৭১- এর কালো মেঘের পর, ২০২০-এ এলো আবার ঘূর্ণিঝড় ;
সেই ঝড়ো বাতাসে আজও লাশের গন্ধ!!
বড় করুণ করোনা সে,
তার অগ্নি – স্পর্শে ঝলসে উঠে হৃদয়।
কুসুম বাগের অজস্র কলি ঝরে গেছে,
বিকশিত হয় নাই তার পাঁপড়ি গুলো ;
সুবাসে মুখরিত হতে পারে নাই দখিনা হাওয়া –
আসিতে পারে নাই ছুটে কালো ভ্রমর।
কিন্তু সেই বাতাসে –
আজও লাশের গন্ধ পাওয়া যায়!!
সেই বাতাসের শব্দে শুনতে পাওয়া যায়,
নব- বিবাহিতা কতো না বধূর কান্না ;
কতো না মায়ের বুক- ফাঁটা হাহাকার।
করুণ দৃষ্টিতে উদাস দুপুরে বসে
আছে কতো না বৃদ্ধ পিতার কন্যা ;
তার বুকে দীর্ঘশ্বাসের শব্দ- গোখরা সাপের মতো আওয়াজ তুলে ; কারণ সে জড়িয়ে ধরতে পারে নাই – তার বৃদ্ধ পিতার লাশ!!
হায় করোনা!!
কী নির্মম, কতো নির্দয়, পাষণ্ড –
কেড়ে নিচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুসের বাতাসটুকু!!
আজ আর কিশোরীরা দখিনা হাওয়ায়-
এলোকেশে ঘুরে বেড়ায় না; কারণ- সেই বাতাসে আজ শুধুই লাশের গন্ধ।
শহরের মোড়ে আজ আর আড্ডায় বসে না-
পাড়ার ছেলেগুলা; সবুজ ঘাসের বুকে গিটারের সুরে আজ আর গান ধরে না অর্বাচীন এর দল!!
টিএসসির চায়ের দোকানে আজ আর –
টুংটাং শব্দ শোনা যায় না,
পাওয়া যায় না অট্টহাসির কোনো মন;
কেবলই বাতাসে লাশের গন্ধ পাওয়া যায়!!
পৃথিবীর বুকে করোনা আজ জমিদার,
করোনা আজ ভূস্বামী, করোনা আজ হায়েনা;
তাইতো আজ ২০২০- এও,
বাতাসে লাশের গন্ধ পাওয়া যায়!!
শিউলী আক্তার
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।