ছুটিতে যেমন কাটছে জবি শিক্ষার্থীদের সময়
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের ভয়ানক প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার দরূন ঘর বন্দি হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও।ছুটিরত অবস্থায় ‘যেমন কাটছে জবি শিক্ষার্থীদের জীবন ‘ মতামতের ভিত্তিতে জানাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিশাত তাসনিম বলেন, প্রথমবারের মতো কোয়ারেন্টাইনের অভিজ্ঞতা। ভেবেছিলাম এবার গৃহবাসী হব হয়ত কিছুদিনের জন্য। কয়েকদিনের মাঝে যখন বন্দী পাখি হয়ে গেলাম তখন বুঝলাম মোটেও ভালো নেই আমি। প্রথমদিকে সময় কাটছিলো উপন্যাস পড়ে, স্মৃতিচারণ করে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে এসব বিষয়ে আগ্রহ তত হারিয়ে যাচ্ছে। অবসাদ শূন্যতা জাপটে ধরছে আমাকে। পৃথিবী যেখানে অসুস্থ সেখানে আমি ভালো আছি এ কথা বড়ই বেমানান। বাসায় বেশিদিন থাকলে নাকি ভালোবাসা কমে যায় সেও বোধ হচ্ছে। ক্লাসগুলোকে মিস করছি হয়তো বা দূরে থাকার দরুণ। মিস করছি টিএসসির চা। মিস করছি প্রাণ প্রিয় বন্ধুদের। শান্তচত্বরের সেই আড্ডাকে। মুক্ত আকাশের নিচে বসে গানে গল্পে কাটানো মহুর্তগুলোকে। করোনাকালে মানুষ বুঝেছে প্রকৃতি কত রূঢ় হতে পারে! এবার শান্ত হও। প্রকৃতির রোমশ নীড়ে মুক্ত আকাশে, বিশুদ্ধ অক্সিজেনে ফিরতে চাই। ততদিন আশা বাঁচিয়ে রাখছি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আসমা আলী মীম বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এক আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। দেশব্যাপী ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত 16 মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ছুটির নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকলে হয়তো এতোটা একঘেয়ামি লাগতো নাহ। অনির্দিষ্ট এই ছুটি অপেক্ষার প্রহর গুনেই কাটছে। প্রতিদিন স্বপ্নে দেখি ক্যাম্পাসের টিএসসিতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। এ্যাসাইনমেন্ট,প্রেজেন্টেশনের প্যারা,পরীক্ষার দুশ্চিন্তা এগুলো যেনো এখন স্মৃতির পাতায়। বিবিএ বিল্ডিংয়ের সিড়ি বেয়ে ছাদে উঠে পুরো শহরটাকে দেখার মধ্যে ছিল এক অন্যরকম আনন্দ। কতোদিন দেখা হয় নাহ প্রিয় ক্যাম্পাসটাকে। বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে হচ্ছে অনলাইনে। সময় কাটছে অস্থিরতা আর সামনে কি অপেক্ষা করছে সেসব দুশ্চিন্তা করে। প্রতিমুহূর্তে এতোসব দুঃসংবাদের মাঝেও একটা ভালো লাগার বিষয় হলো পরিবারের সঙ্গে একটা শ্রেষ্ঠ সময় পার করতে পারছি। মায়ের হাতে হাতে কাজ করা,ছোট্ট পিচ্চি বোনের ভালবাসার আবদারগুলো মেটানো এখন অন্যতম কাজ। সন্ধ্যায় চায়ের কাপে বাবা-মা,ভাই-বোনের সঙ্গে আড্ডা চলছে নিয়ম করে। এই সময়ে নিজের বিভিন্ন স্কিল ডেভলপমেন্ট করে সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। এছাড়া বেশির ভাগ সময়ই কাটছে অনলাইনে নাটক,মুভি,শিক্ষামুলক ভিডিও দেখে। সব কাজের পাশাপাশি ধর্মীয় ইবাদাত তথা নামাজ পড়ে,কুরআন শরীফ পড়ে মহান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ লাভের আশায় বুক বেঁধে আমি আমার দিনগুলো অতিবাহিত করছি। আমি মনে করি আমাদের সকলের পর্যাপ্ত সচেতনতা-ই আমাদের ফিরিয়ে দিতে পারে চিরচেনা সেই সুস্থ পৃথিবী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাহমিয়া ইয়াসমিন অর্পা বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অফুরন্ত ছুটিতেও আনন্দে ভ্রমণে বের হওয়া যাবে না। এই অফুরন্ত ছুটিতেও যাবে না ছোটাছুটি। এখন সময় নিরাপদে বাড়িতে থাকা, নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখা এবং বাসার সবাইকেও নিরাপদ রাখা, যা একইসাথে বাহিরের মানুষদেরও নিরাপদ রাখতে সহায়তা করবে। এখন কোভিড-১৯ মোকাবেলায় আমাদের নিজ নিজ অবস্থান জনসমাগম এড়িয়ে বাড়িতে লম্বা সময় অপেক্ষা করার, এই সময়ে নিজের সময়গুলো প্রোডাক্টিভ উপায়ে কাটিয়ে বাড়ি এবং বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কারের প্রয়োজন, নিজেকে এই মূল্যবান সময়ে প্রস্তুত করে নেওয়া প্রয়োজন। সবসময় ভার্সিটির ব্যস্ত দিনগুলোতে ছুটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা হয়!তবে কে জানতো এই বিনানোটিশে পাওয়া অনির্দিষ্টকালের ছুটি অনেকটা অভিশাপের মতো মনে হবে! যেখানেই তাকানো হয় চারদিকেই করোনা আতঙ্কে ভরপুর! বের হওয়ার স্বাধীনতা নেই! নেই স্বাভাবিক কাজগুলোর তাড়া! তাই বলে বাসায় বসে হেলাফেলা করে সময় কাটানো হয়না! কখনো ইউটিউব দেখে কিছু শিখা হয় রান্না, সেলাই, ঘরের কাজ! কখনো এলিসন, কোরসেরা, ইউডেমি, ইডিএক্সের অনলাইনের বিভিন্ন কোর্সগুলো আগ্রহের সাথে করে নিই। এছাড়াও এসবের ফাঁকে যখন ইন্টারনেট সংযোগ থেকে দূরে থাকি তখন পছন্দের কিছু শতেন্দ্রনাথ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল, সমরেশের বই পড়ে সময় কাটিয়ে নিই। নিজেকে নিয়ে ভাবি সামনে সব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কেমনে লাইফের লক্ষ্যে পৌঁছাতে কাজ করবো। এইতো বেশ কেটে যাচ্ছে আতঙ্কের এই সময়গুলো অনলাইন বেইসড কোর্স, ইউটিউবের প্রোডাক্টিভ কাজগুলো শিখে। এই ছুটির দিনগুলোতে নতুন করে যেই জিনিসটা উপলব্ধি করা হলো তা হচ্ছে ফ্যামিলিকে সময় দেয়া কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। এই ছুটিতে ফ্যামিলির সাথে বসে আড্ডা দেওয়া, দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, করোনা পরিস্থিতিতে সচেতনতা, ক্যারাম, লুডো খেলা ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের সাথে পুরানো সম্পর্ক নতুনভাবে আবিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া নিজ ছাদবাগানে গাছপালার পরিচর্যা করেও অনেকটা সময় কাটানো হয়। প্রতি বিকালে কিছুটা সময় সবুজ প্রকৃতি এবং নীল আকাশের মাঝে বসে চায়ের চুমুক নিয়ে কাটানো ও মনের অনেক আনন্দের খোরাক জোগায়।অফুরন্ত ছুটির এই দিনগুলো হয়তো অনাকাঙ্ক্ষিত সময়! তবুও যতদূর সম্ভব উপভোগ করে কাটানোর চেষ্টা করছি। ছুটির এই সময়গুলো হয়তো শেষ হয়ে যাবে একদিন তবে রয়ে যাবে স্মৃতির পাতায় প্রতিটি মুহূর্ত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাওজিয়া আফিয়া জিনিয়া বলেন, প্রকৃতি আজ নিস্তব্ধ। চারপাশে শুধুই মৃত্যুর মিছিল। বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সরকার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। তখন বুঝিনি করোনা ভাইরাস এতো মারাত্মক মহামারি। ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে আসলাম বাসায়। এসে লকডাউনে কাটতে শুরু করল জীবন। তাই পরিবারকে সময় দেয়ার একটা সুযোগ পেলাম। শুরুতে ভালই কাটছিল সময়। কিন্তু আস্তে আস্তে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অসচেতনতার কারণে আজ আমরা ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে। তাই নিজ দায়িত্ববোধ থেকে মানুষকে এই মহামারি থেকে রক্ষার জন্য গনসচেতনতায় অংশ নিলাম। বিভিন্ন ভাবে তাদের সচেতন করতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আর এই লকডাউনে বাসায় বসে বসে “অসমাপ্ত আত্মজীবনী ” ও হূমায়ুন আহমেদের সাহিত্য সামগ্রী পড়ছি। কিছু সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ করে গরিব-দু:খী মানুষকে সহযোগিতা করছি।আশা করি খুব দ্রুত আমরা এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাবো এবং ফিরে আসব মতিহারের সেই চির চেনা নীলাভূমির বুকে। ইনশাআল্লাহ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রিজু বলেন, মার্চের ১৬ তারিখে শুনতে পেলাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হবে। সবাই বাড়িতে ফিরছে আমি সেই জনস্রোতে ভেসে আসলাম বাড়িতে। প্রথম কয়েকদিন ভালই কাটল বাসায়। একটু ফেসবুক, মাঝেমাঝে টিভি আর এসবে মাঝে একটু বইও খুলেছি বটে। কিন্তু সময়ের সাথে ভাল লাগাটা কমতে থাকে। আর বাড়তে থাকে ভয়। দিন দিন নতুন রুগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুও। এখন কাজ ধানকাটার ধুম লেগেছে গ্রামে। ধান কাটার কাজে লেগে করোনাকে যেন সবাই ভুলেই গেছে একপ্রকার। এদিকে আমিও চেষ্টা করি বাবা মাকে সাহায্য করতে। অনেকদিন পর বাসাই এতো সময় দিতে পারছি। ভালোই লাগছে। কিন্তু এখন একটা নতুন ভয় জন্ম নিয়েছে মনে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয়। পরিস্থিতি এরকম চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পরবে। চাকরীর বাজার আরো কঠিন হবে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা অসহায় হয়ে পড়বে। মিস করছি প্রিয় মানুষগুলোর মুখ। যাদের সাথে সর্বদা ভাগাভাগি করে কাটানো হতো সকল ভাল-খারাপ মহুর্তগুলো।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদিয়া নওশিন বিন্তি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে থমকে আছে গোটা বিশ্ব, বন্ধ হয়ে আছে পুরো বিশ্বের অর্থনীতি। এমনকি এই ভাইরাসের প্রভাব ছড়িয়েছে আমাদের দেশেও। দিন দিন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাই একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি গৃহবন্দি থাকাই বেশি ভালো মনে করেছি। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে ক্যাম্পাসের সবার কথাই অনেক মনে পড়ছে। টানা দুই মাসের ও বেশি গৃহবন্দি থাকার কারণে মাঝেমধ্যেই বিরক্তিবোধ করি। এই সময়টা বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করার মাধ্যমে পার করছি। পরিবারের সদস্যদের সাথে ও অনেক সুন্দর সময় পার করছি। প্রতিদিনের ব্যাস্ত জীবনে আব্বু আম্মুর সাথে ঠিকমত কথাও বলতে পারতাম না। এখন আব্বু আম্মু আপু সবাই একসাথে খুব ভালো সময় পার করছি।ভিডিও কলের মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ হয় এখন। এই প্রথম গৃহবন্দি ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। এক ভিন্ন রকম ঈদ উদযাপন। কোয়ারেন্টাইনে প্রতিদিন ই নিজের কিছু না কিছু দক্ষতা আয়ত্ত করার চেষ্টা করছি। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কালচারাল এক্টেভেটিভস এর মাধ্যমে নিজেকে ব্যাস্ত রাখার চেষ্টা করছি। করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। এখন ই সময় সকলে যদি আমরা সচেতন না হতে পারি তাহলে করোনা ভাইরাস জয়লাভ করবে কিন্তু আমরা তা হতে দিব না। আমাদের সকলের উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিপূর্ণ ভাবে জীবনযাপন করা। পরিশেষে সকলের প্রতি অনুরোধ রইল ঘরে থাকুন,সুস্থ থাকুন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ইনশাআল্লাহ দেখা হবে সবার সাথে এই প্রত্যাশায় রইলাম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আসমা উল হোসনা অর্থী জানান, গত ৮ ই মার্চ বাংলাদেশে ১ম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সরকার ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। তড়িঘড়ি করেই বাসায় আসি। শিক্ষা গ্রহণের জন্য দীর্ঘদিন থেকেই বাইরে থাকার ফলে তেমন বাসায় সময় দেয়া হয়ে ওঠেনা। করোনাকালীন এ ছুটি বাসায় পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পারছি বেশ ভালভাবে। মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমানোর তৃপ্তিটি পুরণ হলো দীর্ঘদিন পর। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে করোনাকালীন সময়ে একদল গুজব সৃষ্টি করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সেই জায়গা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় থেকে গুজব প্রতিরোধে কাজ করছি। যেহেতু এখন হাতে সময় অনেক এই সময়টাতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন লেখকের লেখা তথ্য নির্ভর বইগুলো পড়েই সময় কাটছে। কিন্তু কোথায় যেন এক শূন্যতা কাজ করছে প্রাণের ক্যাম্পাসটির জন্য। সেই চির চেনা ক্যাম্পাসটি ঘিরে হয়ে গেছে কত স্মৃতি, কত ভালবাসা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারহা মনামি বলেন, করোনা মহামারির ছোবলে শুধু বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বই আজ স্থবির হয়ে পরেছে। এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাই আজ গৃহবন্দী জীবন পার করতে হচ্ছে। এই অলস সময়টুকু অতিবাহিত করা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ও বটে। বাসায় সময় কাটছে পরিবারের সদস্যদের সাথেই। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় ও বন্ধ এখন, প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় একরকম ভাটা পরে অাছে। অন্যান্য সময় লম্বা ছুটি গুলো সাধারণত পরীক্ষার শেষে অথবা ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোর জন্য হয়,এবারের ছুটি টা একদমই অনাকাঙ্ক্ষিত ছিলো৷ বাসায় সময় কাটাতে তাই বিভিন্ন অনলাইন কোর্সগুলো করে নিজের মেধাটাকে আর একবার যাচাই এর সুযোগ পাওয়া যাচ্ছ। সাথে শিখা ও যাচ্ছে নতুন করে। নিজের শখের কাজগুলো ও করে সময় পার করছি। বন্ধটা যেহেতু লম্বা সময় জুরেই পছন্দের লেখকদের বই গুলো পড়ার আবার পড়ে সময় কাটছে সাথে নতুন বই ও পড়া হচ্ছ। ফটোগ্রাফি, স্কেচ করেও সময় অতিবাহিত হচ্ছে। দিনের সময়ের একটা বড় অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাটছে। বন্ধুবান্ধব, আত্নীয়স্বজন সবার খোঁজখবর নেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন বড় সহায়ক। নিজের প্রাণের ক্যাম্পাসটিকে অনেক মিস করি। বাসায় যেহেতু নামাজ নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করছি। মহান আল্লাহ তা’য়ালার কাছে এই দোয়া করি তিনি যেন এই করোনা নামক মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করেন।#