গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে ফজলে হাসান আবেদকে স্মরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।
বর্নাঢ্য জীবন ও সফল কর্মময় জীবন স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে ব্র্র্যাক প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার রাজধানীর গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে ‘রিমেম্বারিং স্যার ফজলে হাসান আবেদন: এ ভিশনারি চেঞ্জমেকার’ শিরোনামে এই সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির প্যানেল মডারেটর হিসেবে বক্তব্য করেন। আলোচনায় অংশ নেন ব্র্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ব্র্যাকের সাবেক কোষাধ্যক্ষ সুখেন্দ্র কুমার সরকার, ব্র্যাক ‘আল্ট্রা পুওর প্রোগ্রাম’র সাবেক পরিচালক রাবেয়া ইয়াসমিন। গ্রিন ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের স্যোশাল বন্ডিং ক্লাব এই সভার আয়োজন করে।
সভায় বক্তারা বলেন, অসহায়-দরিদ্র মানুষের অতি আপনজন ছিলেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বুঝতেন না। দরিদ্র তো বটেই, ‘আলট্রা পুওর’ জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করেছেন ফজলে হাসান আবেদ। তারা বলেন, ফজলে হাসান আবেদ বলতেন, আমি থাকব না; হয়তো ব্র্যাকও থাকবে না। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকবে। সেই চিন্তা থেকেই তিনি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন। ফজলে হাসান আবেদ জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ‘আমি’ নয়, ‘আমরা’ শব্দটি বিশ^াসী ছিলেন।
প্রফেসর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্যার ফজলে হাসান আবেদ লিডারশিপ এবং ম্যানেজমেন্টÑ উভয় গুণে গুনান্বিত ছিলেন। তিনি যেমন উৎসাহী করতেন তেমনি দায়িত্বটুকুও বাস্তবায়ন করতেন। তিনি পাবলিক প্রচারণা পছন্দ করতেন না। কিন্তু তিনি যেভাবে মোটিভেট করতেন, সেটা ছিল অসাধারণ। প্রফেসর সালেহ উদ্দিন বলেন, সবচেয়ে ভালো শ্রোতা ছিলেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি কম বলতেন, শুনতেন বেশি। একই সঙ্গে তার ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনাও সবাইকে অনুপ্রাণিত করছে।
প্যানেল মডারেটরের বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বলেন, বেসরকারি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে স্যার ফজলে হাসান আবেদ পরপর পাঁচবার পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছেন। কেন হলেন, এর পেছনে তার কী অবদান ছিল সেটা আমাদের উচ্চশিক্ষায় পড়ুয়া ৩৫ লাখ ছাত্র-ছাত্রীর অনেকেই জানে না। এ সময় তিনি ফজলে হাসান আবেদের জীবনের নানাদিক বর্ণনার পাশাপাশি উপস্থিত সবাইকে এই কৃতিময় মানুষের জীবনী জানতে উৎসাহিত করেন।
সুখেন্দ্র কুমার সরকার বলেন, স্যার ফজলে হাসান আবেদন সমন্বিত প্রচেষ্টায় কাজ করতেন। তিনি ‘আমি’ নয়, ‘আমরা’ শব্দে বিশাসী ছিলেন। তিনি বলতেন, আমি তো কিছুই করতে পারিনি, সব আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও জনগণের কারণে সম্ভব হয়েছে।
ব্র্যাকের ‘আলট্রা পুওর প্রোগ্রাম’র সাবেক পরিচালক রাবেয়া ইয়াসমিন বলেন, ফজলে হাসান আবেদ সবসময় তৃণমূল মানুষের কথা বলতেন। তার ভাষ্যই ছিল- দরিদ্র বিমোচন করতে হবে গ্রামের মানুষের কাছে যেতে হবে, তাদের কথা শুনতে হবে। তবেই তাদের সমস্যা দূর করা যাবে। আর এ কারণেই ব্র্যাকের পিএইডি ডিগ্রীধারী কর্মকর্তাদেরও গ্রামে পাঠানো হত।