কুষ্টিয়ার শ্রেষ্ঠ দর্শনীয় স্থান রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী
তরিকুল ইসলাম।
কুষ্টিয়ার দর্শনীয় ও পুরাকীর্তিগুলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ দর্শনীয় স্থান হল রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি। কুষ্টিয়ার শিলাইদহে অবস্থিত এই কুঠিবাড়িতে প্রতি বছর অজস্র দর্শনার্থী আসেন দেশ – বিদেশ থেকে ।
১২ নভেম্বর, ২০১৯ ইং৷আমাদের পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রথমেই গেলাম গ্রাম সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে ৷এরপর গড়াই নদীর তীরবর্তী একটি ইকোপার্ক ঘুরে শহরের সরকারি তাঁত শিল্প, বুলবুল টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি লিঃ পরিদর্শন করলাম ।
দুপুরের খাবার হিসাবে বিরিয়ানি ও কুমারখালির ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির স্বাদ নিয়ে রওয়ানা দিলাম কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি পরিদর্শনে।এই পর্বে আমরা ছিলাম ছয় জন; রাহিত, আহাদ, নিজাম, আলিমুল, কুতুব ও আমি। তবে ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাহিত, আহাদ এবং আমি গিয়েছিলাম রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে । রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে এটিই ছিল আমাদের প্রথম পরিদর্শন।
কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরবর্তী পদ্মার কোল ঘেষে গড়ে ওঠা শিলাইদহে কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়তি এই রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী ৷এই গ্রামেই বিশ্বকবির জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় কাটে ৷ফলে কবির জীবন ও সাহিত্যের এক বিরাট অংশের সাক্ষী এই বাড়িটি ৷কবিগুরুর দাদা প্রিন্স দ্বারকনাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে জমিদারী নিয়ে এই অন্ঞ্চলে আসেন ৷পরবর্তীতে ১৮৮৯ সালে জমিদার হয়ে কবিগুরু এখানে আসেন এবং ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী করেন ৷
এখানে বসেই গীতান্ঞ্জলি কাব্যগন্থের বৃহৎ অংশ অনুবাদ করেছিলেন ৷কুঠিবাড়িটিতে ১৮ টি কক্ষে ১৮ টি দরজা ও ৪৮ টি জানালা রয়েছে ৷বাড়ির ভেতরে সাজানো আছে বিশ্বকবির ব্যবহৃত পালকি, নৌকা, টেবিল, খাট ও কিছু উল্লেখ্যযোগ্য ছবিসহ সেই সময়ের ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র ৷সবুজের সমারোহে সুশোভিত বাড়িটিতে রয়েছে অসংখ্য আমগাছ ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ – গাছালি ৷পুকুরে পদ্মা বোটের আদলে তৈরি নোকা রয়েছে ৷এছাড়াও গীতান্ঞ্জলি, সোনার তরী ও খেয়া নামে তিনটি রেস্ট হাউজ, একটি মুক্ত মন্ঞ্চ এবং একটি গ্রন্থাগার রয়েছে ৷এছাড়াও মূল প্রাঙ্গণের বাইরে একটি কনভেনশন সেন্টারের নির্মাণ কাজ চলছে ।
শিলাইদহ যাওয়ার পথে আলাউদ্দিন নগর হতে রাস্তার দুপাশ জুড়ে আলাউদ্দিন আহাম্মাদ এর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল,পার্ক ইত্যাদি।এর মধ্যে আলাউদ্দিন আহাম্মাদ শিক্ষা পল্লী পার্ক, শিলাইদহ হতে ফেরার পথে আমরা পার্কটি পরিদর্শন করলাম । যেখানে দুপাশের দেয়ালের উপরে ও পার্শ্বে কুরআন,হাদিসের অসংখ্য বাণী, খ্যাতনামা মনীষীদের অজস্র বাণী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যা প্রকৃত অর্থেই শিক্ষাপল্লী পার্কের অর্থ বহন করে ।