চুয়েটের চার শিক্ষকের ‘বেস্ট পেপার’ অ্যাওয়ার্ড অর্জন

চুয়েট প্রতিনিধি।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর চার শিক্ষক খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এ অনুষ্ঠিত পুরকৌশল বিষয়ক 5th ICCESD-2020 শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে ‘বেস্ট পেপার’ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। পুরষ্কারপ্রাপ্তরা হলেন- পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল, অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আফতাবুর রহমান এবং সহকারী অধ্যাপক জনাব নাফিসা তাবাস্সুম। কনফারেন্সে উপস্থাপনকৃত প্রবন্ধসমূহ থেকে পৃথক তিনটি ক্যাটাগরিতে তাঁরা এই বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম মহোদয় বিজয়ী শিক্ষকদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।

কনফারেন্সে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাটাগরিতে ÒNon-Fired Building Block Using Industrial Wastes (আগুনে না পুড়িয়ে ও শিল্পর্বজ্য ব্যবহার করে ইট তৈরি)” শিরোনামে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের জিসিআরএফ-এর গবেষণা সহযোগী সুদীপ্ত সরকার, পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম, ইংল্যান্ডের লিভারপুল জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মনওয়ার সাদিক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক আলী আবদুল হোসেন।

Post MIddle

গবেষণাকর্ম সম্পর্কে অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম বলেন, “মাটিকে পুড়িয়ে ইটভাটায় যে ইট তৈরি হয় তাতে পরিবেশের উপর অনেক বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং প্রচুর পরিমানে কৃষিজমি নষ্ট করে। এ কারণে বাংলাদেশে সরকারি কাজে আগামী ২০২৪-২৫ সালের পর আর কোন মাটির তৈরি ইট ব্যবহার করা যাবে না। এ লক্ষ্যে বিকল্প পদ্ধতি তৈরি করাই এ গবেষণার মূল বিষয় ছিল। অপরদিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই সময়ে ৮ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন ফ্লাই এ্যাশ তৈরি করবে। এ ছাড়াও কনস্ট্রাকশনের জন্য অপরিহার্য রড তৈরির কারখানা হতে দুই ধরনের স্লাগ তৈরি হয় যার ব্যাবস্থাপনা খুব কষ্টসাধ্য ও ব্যয়সাপেক্ষ। গবেষণাটিতে দেখানো হয়- উক্ত বিকল্প বর্জ্য পদার্থগুলি দিয়ে মাটির ইট হতে অনেক ভাল মানের ইট তৈরি করা সম্ভব।

গবেষণাটি  যৌথভাবে সম্পাদন করেন- চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগ ও ইংল্যাডের লিভারপুল জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগ। চুয়েট পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ অংশের মূখ্য গবেষক অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের সহযোগিতা পেলে কাজটি আরও অনেকদূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।”

এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাটাগরিতে ÒPerformance Evaluation of Drainage Network using HEC-HMS under Different Climatic and Land Use Conditions: A Case StudyÓ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল এবং পুরকৌশল বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী জনাব মেহেদী হাসান মাসুদ। গবেষণাকর্ম বিষয়ে অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল বলেন, “নগর উন্নয়নের ফলে সবুজ এলাকার পরিমাণ কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত পরিমাণ পানি খালগুলোতে যাচ্ছে এবং খালগুলোকে ক্রমাগত কংক্রিট দিয়ে অভেদ্য করায় কোন পানি মাটিতে অনুপ্রবেশ করতে পাচ্ছে না। যার ফলে খালগুলোকে অতিরিক্ত পরিমাণ পানি বহন করতে হচ্ছে। খালগুলোর ধারণক্ষমতা ৪২ শতাংশ কমে গিয়েছে কেবলমাত্র খালগুলোতে ক্রমাগত বর্জ্য ফেলানোর ফলে। এছাড়া অধিকাংশ খালগুলো কর্ণফুলি নদীতে মিলিত হওয়ায় জোয়ারের পানি খালগুলোর মাধ্যমে নগরে প্রবেশ করছে। ফলে জলাবদ্ধতা আরও বেড়ে যাচ্ছে।

জিও-টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (সয়েল) ক্যাটাগরিতে ÒParametric Sensitivity in Large Deformation Analysis by Smoothed Particle Hydrodynamics (SPH)Ó শিরোনামে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আফতাবুর রহমান। আর গবেষণা কাজের সহ-লেখক ছিলেন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব নাফিসা তাবাস্সুম এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (MIST)-এর সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম। গবেষণাকর্ম সম্পর্কে ড. মো. আফতাবুর রহমান বলেন, “আমাদের গবেষণার বিষয় ছিল ভূমিধ্বস বা অন্য যে কোন জিও-টেকনিক্যাল হ্যাজার্ড কম্পিউটার মডেলিং-এর মাধ্যমে আরো নিখুঁতভাবে কিভাবে করা যায় তার ব্যাকগ্রাউন্ড স্ট্যাডি। ভূমিধ্বস গবেষণায় বহুল প্রচলিত ফাইনাইট এলিমেন্ট মডেলের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে আরো নির্ভূলভাবে ভূমিধ্বসের সম্ভাব্য ক্ষতি নিরূপণের জন্য আমরা স্মুথ্ড পার্টিকেল হাইড্রো-ডাইনামিক্সের যৌক্তিকতা নিয়ে গবেষণাকর্ম পরিচালনা করা হয়।”

পছন্দের আরো পোস্ট