র‌্যাগিং ও মাদককে না বললো খুবির ইংরেজি ডিসিপ্লিন

খুবি প্রতিনিধি।

সাধারণ, অনাড়ম্বরভাবে আয়োজন করা একটি উদ্বুদ্ধকরণ অনুষ্ঠান। না ছিলো কোনো ব্যানার, না ছিলো অন্য কোনো আড়ম্বরতা। কিন্তু সেই সাদাসিধে অনুষ্ঠানটাই হয়ে উঠলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনের ২০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণবন্ত, প্রগাঢ়, চিত্রানুগ, আবেগ, উপদেশ ও অনুপ্রেরণামূলক। ডিসিপ্লিন আয়োজিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সাতটি ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীর সমাবেশে অনুষ্ঠানটি শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে মিলনমেলা। ডিসিপ্লিনের প্রত্যেক শ্রেণির প্রত্যেক বর্ষ থেকে একজন করে শিক্ষার্থী তাদের অভিব্যক্তি, প্রত্যয় ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখে।

এর মধ্যে প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীদের পক্ষে তামান্না রহমান তন্বী, দ্বিতীয় বর্ষের মেহেদী হাসান বাপ্পী, তৃতীয় বর্ষের মোঃ শাহীন আলম, চতুর্থ বর্ষের নওশাদ হাসান নিলয়, মাস্টার্সের শারমিন সুলতানা, এম এ ইন ইংলিশ ল্যাগুয়েজের মোঃ আব্দুল হান্নান, নাসিফ সাইদ। সকলেই ইংরেজি ডিসিপ্লিনকে একটি পরিবার হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে জ্যেষ্ঠ ও অনুজদের মধ্যে একটি অভূতপূর্ব পরিবেশ, সমন্বয় ও সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়। শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ডিসিপ্লিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এবং দেশের মধ্যে একটি অনুসরণীয় ডিসিপ্লিন হিসেবে গড়ে তোলার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করে সকলেই হাত তুলে র‌্যাগিং ও মাদককে না ঘোষণা দেয়। প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গত ৩৮দিনের অভিজ্ঞতায় তারা র‌্যাগিংমুক্ত রয়েছে। তারাও ভবিষ্যতে এ ধারা চালু রাখবে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। তিনি তাঁর বক্তব্য শেষে গাইলেন ‘আমরা করবো জয়…’ গানটি।

Post MIddle

আর তাঁর সাথে সমস্বরে গাইলেন শিক্ষক ও মিলনায়তন ভরা সকল শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. এ আর এম মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনে প্রধান অতিথি বলেন শিক্ষা আমাদেরকে চিরকালীন মনুষ্যত্বের সাধনাকে জাগ্রত করে, চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে। মানুষের ভেতর যে অসম্ভব ও অসীম সম্ভাবনা রয়েছে, যে সৃজনশীলতা রয়েছে তার ব্যাপৃতি হলে, প্রকাশ ঘটাতে পারলে সকল অশুভতা বিদুরীভূত হয়। তিনি বলেন যারা সাহিত্যের ছাত্র, যারা সঙ্গীত চর্চা করে, যারা ফুলকে ভালোবাসে তারা কাউকে খুন করতে পারে না, অর্থাৎ তারা কাউকে কষ্ট দিতে পারে না, কখনও মন্দের সাথে যুক্ত হতে পারে না। সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা জীবনের অন্তরাত্মাকে সুষময় করে তোলে মানবিক চেতনাকে জাগ্রত করে।

তিনি বলেন দেশের মধ্যে এখনও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ শ্রেষ্ঠ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ। এ ধারাকে আরও প্রতিষ্ঠিত করে এমন নজীর স্থাপন করতে হবে তা যেনো দেশের সর্বত্র অনুকরণীয় হয়। তিনি ইংরেজি ডিসিপ্লিনের এ উদ্যোগকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। ডিসিপ্লিনের সিনিয়র প্রফেসর ড. মোঃ ইমদাদুল হক স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সাঞ্চলনা করেন প্রফেসর মোঃ সামিউল হক। সভাপতি ঘোষণা দেন আগামী মার্চ মাসে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের বিশবছর পূর্তি উৎসব উদযাপন করা হবে।

পছন্দের আরো পোস্ট