সনদপত্রে বানান ভুল

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া মূল সনদপত্রে বিভাগ ও হলের নামের বানান ভুল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত একটি সনদের ছবিতে এমন ভুল ধরা পড়ে। পরবর্তীতে সনদ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ভুলে ভরা আরও বেশ কিছু সনদের ছবি প্রকাশ করে। সমাবর্তনের মাধ্যমে পাওয়া মূল সনদপত্রে এ ধরনের ভুলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে তারা।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে ও তাদের মূল সনদ দেখে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ অন্তর্ভুক্ত লোক প্রশাসন বিভাগের ইংরেজি নামের বানানে ‘public’ এর জায়গায় ‘pablic’ লেখা হয়েছে। এছাড়াও ছেলেদের আবাসিক হল শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের নামের বানানেও ভিন্নতা পাওয়া গেছে। কোনো কোনো সার্টিফিকেটে শহীদ বানান লেখা হয়েছে (shahid) আবার কোথাও লেখা হয়েছে (Shaheed)। এছাড়া ‘দত্ত’ শব্দটির নামের বানানেও কোথাও লেখা হয়েছে ‘এ’ (Datta) দিয়ে আবার কোথাও (Dutta) ‘ইউ’ দিয়ে।

এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের নামের বানানেও ভুল পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের বিভাগের নামের বানানে একাউন্টিং ও এন্ড শব্দ দুটির মাঝে কোনো স্পেস না রেখে একসাথে (Accountingand) লেখা হয়েছে।

সনদপত্রে ভুলের বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী লোক প্রশাসন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা কামাল বলেন, ‘একটা প্রশাসন কতটা অজ্ঞ, নির্বুদ্ধি, আর মূর্খ হলে কারো মুল সনদে এরকম ভুল করতে পারে সেটা বুঝানোর ভাষা নেই! এরা কিভাবে চাকরী পায় এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়? যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন জাগে।’

Post MIddle

এছাড়া ভুল করা হয়েছে মেয়েদের আবাসিক হল নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের নামের ইংরেজি বানানেও। হলটির নামের বানানে (Nawab Faizunnesa Chowdhurani) এর পরিবর্তে (Nawab faizunnissa Choudhurani) লেখা হয়েছে।

হলের নামের বানান ভুল নিয়ে রসায়ন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা মেয়েরা সবসময়ই সকল অফিসিয়াল কাজে-কর্মে আমাদের হলের নাম ইংরেজিতে ‘Nawab Faizunnesa Chowdhurani Hall’ এভাবেই লিখে এসেছি। এমনকি গুগল ম্যাপেও একইরকম বানান। কিন্তু আমাদের সার্টিফিকেটে দেখি অন্যরকম বানান! নামের বানান ভুল অবশ্যই বড় একটা ভুল! মানুষের নামের বানান ভুল হলে যদি পরবর্তীতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় তাহলে এখানেও একই হওয়ার কথা! আমরা প্রশাসনের কাছে এতটা অসতর্কতামূলক কর্মকান্ড আশা করিনি।’

এ বিষয়ে সমাবর্তন উপলক্ষে গঠিত সনদ তৈরি ও বিতরণ উপ-কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার জানান, ‘এটা গুরুতর কোনো সমস্যা না। আমরা পূর্ববর্তী সাময়িক সনদপত্র (প্রবিশনাল সার্টিফিকেট) জমা রেখে শিক্ষার্থীদের মূল সনদপত্র দিয়েছি। আগের সনদপত্রে কোথাও ভুল থাকলে সেটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা জানতে চেয়েছি। অনেকেই হয়তো বলে নাই বা পরীক্ষা দপ্তরের টাইপিং মিসটেক হয়ে ভুল হতে পারে।’
এর সমাধান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাদের সমস্যা হয়েছে তারা আমাদের জানালে আমরা তা সমাধান করে দিবো। সেক্ষেত্রে মূল সনদ যেটা দিয়েছি সেটা জমা রেখে তথ্য ঠিক করে একই সিরিয়ালে আবার মূল সনদ দেওয়া যাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের জানান, ‘মূল সনদপত্র তৈরির আগে বারবার চেক করা হয়েছে। কোনো ভুল থাকার কথা না। তবে তারপরও যদি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল থাকে তবে তা সংশোধন করে আগেরটিকে বাতিল করে নতুন সনদপত্র দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে উপাচার্যের সাথেও কথা হয়েছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।’

উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো: আবদুল হামিদ সমাবর্তনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচ থেকে অষ্টম ব্যাচ পর্যন্ত মোট ৫৬৪৮ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

পছন্দের আরো পোস্ট