এইউপিএফের পর্দা নামলো ড্যাফোডিলের ক্যাম্পাসে
নিজস্ব প্রতিবেদক।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পর্দা নামল তিন দিনব্যাপী (২২-২৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেডিন্টেস ফোরাম-২০১৯ (এইউপিএফ-২০১৯) এর।
গতকাল (২৪ নভেম্বর) রোববার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায় ১৮তম এইউপিএফ-২০১৯ আয়োজনের সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের ভেলর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য ড. গোবিন্দস্বামী বিশ্বনাথন, দক্ষিণ কোরিয়ার দংসিউ ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ড. জ্যাকুক চ্যাং, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য ও এইউপিএফ-২০১৯ এর আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদারসহ বাংলাদশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও এশিয়ার ১৫টি দেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা দেড় শতাধিক উপাচার্য, প্রেসিডেন্ট ও রেক্টরবৃন্দ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ড. মো. সবুর খান আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য এইউপিএফ-২০২০ এর আয়োজক প্রতিষ্ঠান ভেলর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (ভিআইটি) প্রতিষ্ঠাতা উপার্য ড. গোবিন্দস্বামী বিশ্বনাথনের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এইউপিএফ-এর পতাকা তুলে দেন।
এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থী-শিক্ষক বিনিময়, পিএইচডি প্রদান, প্রযুক্তি বিমিনয় ও পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক ৬৪টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিএনসিসি দল গার্ড অব অনার প্রদান করে এবং কালাচারাল ক্লাবের শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী নাচ, লাঠি খেলাসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন অতিথিদের সামনে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, এইউপিএফের প্রতিপাদ্য বিষয় উদ্যোক্তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি এটি অত্যন্ত সময়পোযোগী প্রতিপাদ্য। কারণ উদ্যোক্তাভিত্তিক শিক্ষাব্যস্থা গড়ে তোলা ছাড়া ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তা তৈরি করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে প্রচুর উদ্যোক্তা প্রয়োজন। উদ্যোক্তা তৈরি হলে বহু লোকের কর্মসংস্থান হয়। চাকরির মোহ থেকে তরুণরা মুক্তি পায়। অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হয়। সর্বোপরি মানুষের জীবযাত্রার মান উন্নয়ন হয়। এসময় তিনি বাংলাদেশে এইউপিএফ আয়োজন করার জন্য ড্যাফোডিল বিশ^বিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানান।
উদ্যোক্তা উন্নয়নে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার প্রশংসা করে অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ আরও বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি করতে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এসব উদ্যোগ অনুসরণ করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসেরও প্রসংশা করেন। ড. কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, অত্যন্ত চমৎকার একটি ক্যাম্পাস। এমন অনিন্দ্য সুন্দর একটি ক্যাম্পাস রেখে শিক্ষার্থীরা কেন যানজটের যন্ত্রণাময় শহুরে ক্যাম্পাসে পড়তে যায়, সেটা তাঁর বোধগম্য নয়। তিনি আরও বলেন, তিনি যদি তরুণ হতেন, তাহলে এমন সুন্দর একটি ক্যাম্পাসেই পড়ালেখা করতেন।
বাংলাদেশে এইউপিএফ আয়োজনের সুযোগ প্রদানের জন্য এইউপিএফ কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান ড. মো. সবুর খান। তিনি বলেন, এ ধরনের একটি বড় আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় গর্বিত। এ সময় তিনি আগামী বছরের এইউপিএফ আয়োজকদের প্রতি শুভকামনা জানান।
উল্লেখ্য, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে গত ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল ১৮তম এইউপিএফ-২০১৯। গতকাল শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট বেইবার্স আলতুনতাস। তিন দিনের আয়োজনে ছিল বিভিন্ন বিষয়ে সেমিনার, প্যানেল আলোচনা, গোলটেবিল বৈঠক, গালা ডিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জমকালো এই আয়োজনের পর্দা নামল আজ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায়।