১৯৭১ এর গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী

নিজস্ব প্রতিবেদক।

আজ (২৩ নভেম্বর) বাংলা একাডেমিতে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর উদ্যোগে ‘১৯৭১ – এর গণহত্যা, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আজ সকাল সাড়ে দশটায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এনডিসি এর সভাপতিত্বে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

অতিথিদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যের জুলিয়ান ফ্রান্সিস, কম্বোডিয়ার কুম সোমালি, ভারতের ড. সঞ্জয় কে. ভরদ্বাজ, মিয়ানমারের ড. খিন জ উইন, তুরষ্কের ফেরহাত আতিক, বাংলাদেশের শাহরিয়ার কবির। সমাপনী বক্তব্য রাখেন ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের সভাপতি ড. মুনতাসীর মামুন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতিক।

দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৭ টি দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনা ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। ভারত, ইতালি, তুরস্ক, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, যুক্তরাজ্য ইত্যাদি দেশ থেকে ৫০ জন বিশেষজ্ঞ গবেষক এতে যোগ দিয়েছেন।

Post MIddle

সভাপতির বক্তৃতায় ড. মো: আবু হেনা মোস্তফা কামাল দেশি বিদেশি সকল অতিথিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। ধ্বংসপ্রায় স্বাধীনতার চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করতে গণহত্যা জাদুঘর নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন সেই প্রচেষ্টারই অংশ। গণহত্যা জাদুঘরকে সংস্কৃতিমন্ত্রনালয় যে সহযোগীতা করছে ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে।

সমাপনী বক্তব্যে ড. মুনতাসীর মামুন একাত্তরের গণহত্যা-নির্যাতনের কয়েকটি নিদর্শন তুলে ধরে বলেন, গণহত্যা মুক্তিযুদ্ধের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এই ইতিহাসকে আমাদের জনসম্মুখে তুলে ধরতে হবে। তিনি মাতৃভাষায় ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, মাতৃভাষায় ইতিহাসচর্চার মাধ্যমে ইতিহাসকে গণমুখী করা সম্ভব। মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এসবের বিরুদ্ধে লড়তে এর প্রয়োজন অত্যাধিক। দেশের প্রতি আমাদের যে ঋণ তা আমরা শোধ করতে না পারলেও, স্বীকার তো করতে পারি। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবেনা। এই ইতিহাস উঠে আসবে গণহত্যা নির্যাতনের ইতিহাসের মাধ্যমে। যারা গণহত্যা করেছে, যারা এর সমর্থন করে তারা সমানভাবে অপরাধী। তারা মানবসমাজের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তিনি সম্মেলনের অংশগ্রহনকারী প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান।

বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যেও গণহত্যা বন্ধে পৃথিবীর প্রতি আহ্বান জানান। সেই সাথে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তারা বলেন, যে ইতিহাস বিস্মৃত হয়েছে সেটি পুনরুদ্ধারের জন্য এই ধরণের সম্মেলন প্রয়োজন। উপস্থিত সকল বক্তাই একটি মানবিক পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর এর এটি তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যা, বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি ও বঙ্গন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়।

পছন্দের আরো পোস্ট