পর্দা নামলো ড্যাফোডিল আইসিটি কার্নিভালের

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায় শেষ হয়েছে দিনব্যাপী ‘ড্যাফোডিল আইসিটি কার্নিভাল ২০১৯’। ২৬ অক্টোবর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য এবং গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার, স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিন প্রফেসর ড. মোস্তফা কামাল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. সৈয়দ আকতার হোসেন, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. তৌহিদ ভূইয়া, মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের প্রধান ড. শেখ মোহাম্মদ আলায়ার, কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের প্রধান সরোয়ার হোসেন মোল্লা প্রমুখ।

দিনব্যাপী এ কার্নিভালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং,মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) ও কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগসহ ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্কের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহস্রা ধিক শিক্ষার্থী প্রায় শতাধিক প্রকল্প প্রদর্শন করে। এর মধ্য থেকে জুরি বোর্ড সেরা দশটি প্রকল্পকের মাঝে মোট ২০ লাখ টাকার পুরস্কার প্রদান করেন। সেরা দশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘স্মার্ট হোম অটোমেশন সিস্টেম’। এ দলের সদস্যরা হলেন আব্দুল্লাহ আল ইয়ামিন, সামসুজ্জামান মিয়া ও প্রসেঞ্জিৎ বৈরাগী। দ্বিতীয় হয়েছে সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদেরই অপর একটি প্রকল্প ‘স্কুল ৩৬০’। এ প্রকল্পের সদস্যরা হলেন সাজ্জাদুর রহমান, রাকিবুল ইসলাম ও বোরহান উদ্দিন।

এছাড়া তৃতীয় থেকে ১০ম স্থান পর্যন্ত যথাক্রমে রয়েছে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘রিমোট ডক্টর’, সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘সয়েল মনিটরিং সিস্টেম’, সিএসই বিভাগের (স্থায়ী ক্যাম্পাস) শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘ডিআইইউ ক্যাম্পাস গাইড’, বাংলাদেশ স্কিল ডেভলপমেন্ট ইনস্টিটিউট ও ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘অটো কনট্রোলিং পোলট্রি’, কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘অকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’, কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অপর একদল শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘বেকারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’, বিএসডিআই ও দিপ্তির শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘হ্যাপি হাব’, এবং সিএসই বিভাগের (স্থায়ী ক্যাম্পাস) শিক্ষার্থীদের প্রকল্প ‘স্মাট ফার্ম থ্রো আইওটি’। এছাড়াও বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এমসিটি বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

Post MIddle

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ এখন এক স্বপ্নের যাত্রার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেই স্বপ্নের নাম সুখী-সমৃদ্ধ-উন্নত বাংলাদেশ। এই স্বপ্ন পূরণ হবে তরুণ শিক্ষার্থীদের হাত ধরেই। কারণ বাংলাদেশে এখন প্রায় ৮ কোটি তরুণ। অসম্ভব মেধাবী এই তরুণ প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা ও দিক নির্দেশনা দিতে পারলে তারাই বদলে দেবে বাংলাদেশকে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সেই কাজ সুনিপুনভাবে করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন আইসিটি কার্নিভালের প্রসংশা করে বলেন, এ ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী মেধাকে বিকশিত করতে সাহায্য করবে। শিক্ষার্থীরা পাঠ্য পুস্তকের বাইরে এসে নিজের মেধাকে যাচাই করার সুযোগ পাবে। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ড. মোঃ সবুর খান বলেন, আগামীর পৃথিবী হবে তথ্য প্রযুক্তির। ফলে তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞানের বিকাশ ছাড়া ভবিষ্যৎ পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব নয়। এজন্য শিক্ষার্থীদেরকে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনে অনুপ্রাণিত করতে এ কার্নিভালের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসকে হাইটেক পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ইনোভেশন ল্যাব, নলেজ ভ্যালী, স্টার্ট আপমার্কেটসহ অবকাঠামো উন্নয়নও পরিবশ নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বসেই তথ্যপ্রযুক্তি সেবা ও পন্য বিপণণ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে। এসব সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদেরকে দক্ষ রূপে গড়ে তোলার পাশাপাশি ছাত্রাবস্থাতেই অর্থ উপার্যন করতে পারে, সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

এসময় ড. মোঃ সবুর খান আরো বলেন, ভোক্তার চাহিদাকে উপলব্ধি করে পণ্যের আইডিয়া উদ্ভাবন করতে হবে। তাহলে সেই উদ্ভাবন দীর্ঘমেয়াদে সফল হবে। এখন যেহেতু গ্লোবালাইজেশনের যুগ, তাই সমগ্র পৃথিবীর ভোক্তার চাহিদা মাথায় রেখে এমন প্রকল্পের ডিজাইন করতে হবে যা একইসঙ্গে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর উপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের হয়। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মোঃ সবুর খান আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য রপ্তানির জন্য সরকার ১০ শতাংশ হারে আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে। এই সুযোগ তোমাদেরকে গ্রহণ করতে হবে।

প্রতি বছর আইসিটি কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে ড. মো. সবুর খান বলেন, আগামী বছর থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদেরকেও এ কার্নিভালে আমন্ত্রণ জানানো হবে। শুধু তাই নয়, দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের চাকরি নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যতে ড্যাফোডিল বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট ফেয়ারের আয়োজন করবে বলে জানান তিনি।

পছন্দের আরো পোস্ট