রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করে সংগঠনটি। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবনে রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক পর্বের উদ্বোধন করেন।

পরে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সিনেটে ‘আগামী দিনের সাংবাদিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদ বকুল।

তিনি বলেন, গণমাধ্যম হলো রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। রাষ্ট্রের অন্য তিনটি স্তম্ভ যদি দুর্বল হয়ে যায় সেক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যম সেগুলোকে প্রভাবিত করে এবং সুষ্ঠুভাবে চলতে পথ প্রদর্শন করে। তাই রাষ্ট্র সঠিকভাবে পরিচালিত হবার জন্য সংবাদমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকা জরুরি। সাংবাতিকতাকে গণতন্ত্রের জন্য ‘ওয়াচ ডগ’র সাথে তুলনা করা যেতে পারে।

সংবাদপত্রের ইতিহাস বর্ণনা করে তিনি বলেন, সময়ের পরিবর্তনে সংবাদ মাধ্যমে একটি পরিবর্তন এসেছে। সাংবাদিকতার একটি ইতিহাস রয়েছে। শুরুর দিকটা প্রিন্ট নির্ভর ছিল। অনলাইনের প্রবণতা তেমনভাবে ছিলো না। সে সময় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হবার পরেই সবাই কোন বিষয় সম্পর্কে অবগত হতো। তবে এখন সকল পত্রিকা অনলাইন নির্ভর হয়েছে। এতে করে তাৎক্ষণিকভাবে যেকোন তথ্য পাওয়া সম্ভব। পত্রিকাগুলো অনলাইন ভিত্তিক হওয়ার কারণে প্রিন্ট পত্রিকার প্রবণতা কমতে শুরু করেছে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, দিনের পর দিন সংবাদ মাধ্যমে পরিবর্তন আসলেও সাংবাদিকতা রয়েই গেছে। ভবিষ্যতেও সাংবাদিকতা থাকবে। হয়তো শুধু সংবাদমাধ্যম পরিবর্তন হয়ে নতুন মাত্রার গণমাধ্যম আসবে। সংবাদ যে মাধ্যমেই হোক না কেন একজন সাংবাদিককে অবশ্যই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে হবে।

Post MIddle

সংবাদকর্মীকে ডাক্তারের সাথে তুলনা করে তিনি আরও বলেন, ডাক্তার যেমন রোগির চিকিৎসা করে তেমনি একজন সংবাদকর্মী সমাজ, দেশ ও জাতির সেবা করে থাকে। একটি সংবাদ প্রকাশে দেশ ও জাতির যেমন কল্যাণ হতে পারে ঠিক তেমনি একটি সংবাদই পারে দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে। তাই সাংবাদিকদের প্রচুর অধ্যয়ন করতে হবে। একজন মানুষ মেধাবী হতে পারে তবে পড়াশোনা একজন মানুষের মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করে। তাই সংবাদকর্মীকে অনেক অধ্যয়ন করতে হবে, মনুষত্বহীন সাংবাদিক হওয়া যাবে না।

রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মর্তুজা নুরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফরিদের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী রমজান ও সাবেক সভাপতি কায়কোবাদ খান।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু ও জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ ও সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক।

এসময় বিশ^বিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা ছাড়াও ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিন সন্ধ্যা ছয়টায় সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি ২০০১ সালের ২৪ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা চর্চা করে আসছে সংগঠনটি।

পছন্দের আরো পোস্ট