কুবিতে ‘শালবনের গান’র পাঠ উন্মোচন

|| কুবি প্রতিনিধি ||

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বাংলা বিভাগের ৬ষ্ঠ আবর্তনের শিক্ষার্থীদের লেখা সংস্কৃত মন্দাক্রান্তা ছন্দের কাব্য ‘শালবনের গান’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন করা হয়েছে। বুধবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সামাজিক বন বিভাগে এ উপলক্ষে একটি সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়।

‘পূর্ণ তব আজ এই প্রাণ’ স্লোগানে ‘শালবনের গান’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন শীর্ষক সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বইটির সম্পাদক কামরুন নাহার শীলা। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক গাজীউল হক সোহাগ। এছাড়াও বাংলা বিভাগের ৬ষ্ঠ আবর্তনের শিক্ষার্থীরা আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন।

সাহিত্যের ভাষায়, সংস্কৃত মন্দাক্রান্তা ছন্দের কবিতায় প্রতিটি পঙক্তি তিন পর্বে বিন্যস্ত থাকে যা মোট সতেরো অক্ষর ও সাতাশ মাত্রার মাধ্যমে লেখা হয়। সংস্কৃত সেই ছন্দবিন্যাসের আলোকে সমকালীন সমাজ, দেশ, পরিবেশ, মানুষ নিয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের লেখা এই বইয়ে কবিতাগুলো পেয়েছে নতুন আবহ। প্রায় একশত পৃষ্ঠার এই বইটিতে বাংলা ৬ষ্ঠ আবর্তনের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর একটি করে কবিতা রয়েছে।

সাহিত্য আড্ডায় বইটি সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা জানান, সংস্কৃত সাহিত্যাকাশের উজ্জ্বলতর কবি কালিদাসের লেখা মন্দাক্রান্তা ছন্দের এক অনবদ্য কাব্য ‘মেঘদূত’ আমাদের পাঠ্য ছিলো। অনুবাদ সাহিত্যের ক্লাসে সেটি আমাদের পড়িয়েছেন কোর্স শিক্ষক কামরুন নাহার শীলা। ক্লাসে কালিদাসের সেই ‘বন্দি হৃদয়ের বিশ্বভ্রমণ’ আমরা শুনেছি, অনুধাবন করেছি মনন দিয়ে।

Post MIddle


পরবর্তীকালে সেই মন্দাক্রান্তা ছন্দে কবিতা লেখার চেষ্টা করেছি ক্লাসের সবাই (৪৩ জন), পরীক্ষার অংশ হিসেবে। কবিতাগুলোর কোনোটা হয়েছে অসাধারণ, আবার কোনোটাতে ছন্দ কিংবা শব্দগত কিছু বিচ্যুতি ছিল, যা আমাদের কোর্স শিক্ষক পরিমার্জন করে দিয়েছেন এবং সবশেষে ‘শালবনের গান’ নামে বইটি আলোর মুখ দেখেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অন্যতম স্মৃতির বাহক হয়ে থাকবে এই বইটি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এটি আমাদের ক্লাসের সবার একটি বড় অর্জন। যখনই বইটি খুলে দেখবো, তখনই ক্লাসের সবাইকে (৪৩ জন) মনে পড়বে একসাথে। এরচেয়ে মধুর স্মৃতিচারণ আর হতে পারে না।

পাঠ উন্মোচন আড্ডায় আমন্ত্রিত অতিথি দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক গাজীউল হক সোহাগ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই প্রাণবন্ত আড্ডায় আসতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। কবিতা আমার অন্যতম ভালোলাগার একটি বিষয়। ‘শালবনের গান’ বইয়ে বিরল সংস্কৃত ছন্দে শিক্ষার্থীরা যেভাবে তাদের মনের কথাগুলো ফুটিয়ে তোলেছে তা অভাবনীয়।’

শিক্ষার্থীদের অদম্য আগ্রহ ও প্রচেষ্টাই ‘শালবনের গান’ প্রকাশে ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে বইটির সম্পাদক কামরুন নাহার শীলা জানান, ‘সংস্কৃত মন্দাক্রান্তা ছন্দে লেখা ‘শালবনের গান’ বইয়ের কবিতাগুলো বাংলা ৬ষ্ঠ আবর্তনের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার অংশ থেকে পরিমার্জিত হয়ে প্রকাশ পেয়েছে। সংকলনটি তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অটুট বন্ধুত্বের স্মারক হয়ে থাকবে আজীবন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এটি কবিতাচর্চায় উৎসাহ যোগালে তা আমাদের জন্য পরম পাওয়া হিসেবে বিবেচিত হবে।’

উল্লেখ্য, ‘শালবনের গান’ বইটি বাতিঘরের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কবিতাভবন থেকে প্রকাশ পেয়েছে। বইটির সম্পাদনায় ছিলেন কামরুন নাহার শীলা। প্রচ্ছদ এঁকেছেন মুয়িন পারভেজ। বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে ‘মেঘদূত’ এর কবি কালিদাসকে।

 

কুবি/এমকে

পছন্দের আরো পোস্ট