সাদা পাথরের দেশে
শাদমান শাবাবঃ
“পুরো রাস্তা ট্রলারে যাবো, মজা হবে অনেক”এমন কথা শুনে আমার মতো সাঁতার না পারাদের মনে মজার চেয়ে ভয়টাই হয়ত বেশি ছিল।
তাই তো শেষমেশ সবার কথা চিন্তা করে ট্রলার কনফার্ম করে ফেলার পরেও ট্যুরের আগেরদিন রাত ১২ টায় ট্রলার ক্যান্সেল করে ঠিক করা হয় বাস। ‘আমরা বাসে যাচ্ছি’- কথাটাই ছিল আমার কাছে প্রথম চমক। খুশিতে আত্মহারা হয়ে চোখের ঘুম উধাও।
সকালে উঠতে হবে,তাই একটু ঘুমিয়ে নেওয়া। কারণ- যাত্রাপথে ঘুমালে মজা মিস হয়ে যেতে পারে। এক্সাইটমেন্ট এতটাই কাজ করছিল যে সবার আগে ৬ঃ৪৫ এ গিয়ে গেইটে বসে ছিলাম। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ১ঘন্টা পরে যাত্রা শুরু হয়। বাস মামার চালানো দেখে মনে হচ্ছিল বিমানের পাইলটকে বাস ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সড়কপথে তাই পেলাম খানিকটা বিমানের ছোঁয়া।
নাচ-গান নিয়ে কি বলবো! উড়কে পারকে অবস্থা। কোন রকম ভোগান্তি ছাড়াই মজামাস্তি করতে করতে ১১টার দিকে পৌঁছে গেলাম ভোলাগঞ্জ।
ছবি তোলার পর্বটা শুরু বাস থেকে নামার পরেই। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে মূল স্পটে যাওয়ার পরে চোখ পুরাই ছানাবানা হয়ে গেল। সাদাপাথর, স্বচ্ছ শীতল পানি, নীল আকাশে সাদা মেঘেদের হাতছানি আর সাথে ছিল পাহাড়ী মনোলোভা দৃশ্যের এক অসাধারণ কম্বিনেশন।
সবাই নামল পানিতে। আর আমি রৌদে পুড়লাম সাথে খানিকটা আপেক্ষ নিয়ে বসে থাকলাম। আনুমানিক ১ঃ৪০ এর দিকে সবাই মিলে একসাথে তৃপ্তি নিয়ে খাওয়া দাওয়ার পর্ব শুরু করলাম। কেউ কেউ মজা পেয়ে পুনরায় নামল পানিতে। অবশেষে ৩ঃ৩০ এর দিকে রওনা দিলাম নৌকায় চড়ে।
বাসে উঠে গরমে সবাই হাশফাঁশ করতে লাগলো। পাইলট মামা বাস ছাড়ার পর স্বস্তি। খানিকটা ঝিমুনির পর শুরু হলো জমপেশ নাচ-গান। এরপর বাচ্চু টি স্টলে নেমে চা খেয়ে সবার ক্লান্তি দূর করা, আমাদের আনন্দের মাত্রা দেখে মামার ইচ্ছা করে ৫ মিনিটের রাস্তা ১৫ মিনিটে আসা, ছোটখাট মজা-সব মিলিয়ে এক কথায় অসাধারণ এক দিন ছিল।
এই অধমের দিনটা উপভোগ্য করে তোলার জন্য তোদের অবিরাম ভালোবাসা।
ভালোবাসার ইকো-২৮।