রাবিতে ফরমের মূল্য হ্রাস ও হল খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন

রাবি প্রতিনিধিঃ

ভর্তি ফরমের উচ্চমূল্য ও দীর্ঘদিন হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ যখন অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িকতার চর্চা শুরু হয়েছে। কেবল ঈদ উপলক্ষেই দীর্ঘদিন হল বন্ধ রাখা হয়। অন্য ধর্মের উৎসবে রাখা হয় না।

এ থেকে কি প্রমাণিত হয়? এখানে সকল ধর্মের শিক্ষার্থীই পড়াশোনা করছেন। তাই শুধু ঈদের জন্য এতোদিনের ছুটি দিয়ে অন্য ধর্মাবলম্বীরা কি করবেন? গত ঈদেও ২৪ দিন হল বন্ধ ছিল। বিশ^বিদ্যালয়ের হল কেন এতোদিন বন্ধ থাকবে এর কোন ব্যাখ্যা আমরা আজও প্রশাসনের কাছ থেকে পাইনি।

Post MIddle

তারা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী যেখানে চায়, সেখানে কোন যুক্তিতে প্রশাসন হল বন্ধ রাখে তা বোধগম্য নয়। হল বন্ধ থাকলে গবেষণা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। যেটার প্রভাব পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের ক্রমের উপর। আবার দেখা যায়, ছুটির পরপরই পরীক্ষা থাকে।

তখন একজন শিক্ষার্থীকে প্রস্তুতি নিতে বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আমরা হল খোলা রাখার জন্য প্রাধ্যক্ষ পরিষদের কাছে জোর দাবি জানাই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসন যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয় তবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

ভর্তি ফরমের মূল্য নিয়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরমের মূল্য কিভাবে ২০৩৫ টাকা হতে পারে? বর্তমানে ছাত্র সংসদ না থাকায় প্রশাসন আমাদের মতামতকে পাত্তাই দিচ্ছে না। ‘জমিদার-প্রজা’ সম্পর্কের মত তাদের অন্যায় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এ কেমন বিকারগ্রস্ততা প্রশাসনের? আমরা চাই প্রশাসন সুবিবেচকের পরিচয় দিয়ে দ্রুত বিষয়টি সমাধান করবে।

এর আগে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি কমিয়ে সাতদিন করতে হবে, বিশেষ কিংবা জরুরি কোন পরিস্থিতি ছাড়া হল বন্ধ করা যাবে না, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি ফরমের মূল্য অনধিক ৫০০ টাকা ধার্য করতে হবে, বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ রেখে আলাদা ইউনিটের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ভর্তি পরীক্ষায় ৩২ হাজার সিলেকশন পদ্ধতি বাতিলসহ নির্দিষ্ট ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে।

হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রফিক মিয়া, পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হিমেল, ব্যাংকিং ও ইনস্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী জামাল মিয়া, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল শান্ত প্রমুখ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।#

পছন্দের আরো পোস্ট