ভর্তি পরীক্ষায় নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন
তানভীর অর্ণব,রাবি প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী এসব শিক্ষার্থীর প্রায় সবাই রাজশাহীর বিভিন্ন কোচিংয়ের শিক্ষার্থী। এরা কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদের পরামর্শেই আন্দোলন করছে বলে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এ বছর ভর্তি পরীক্ষা হবে মাত্র তিনটি ইউনিটে। প্রতি ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবে মাত্র ৩২ হাজার শিক্ষার্থী। একটি ইউনিটের ফরমের মূল্য ১৯৮০ টাকা। একজন শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে যে বিভাগ থেকে পাশ করেছে, সেই শিক্ষার্থী কেবল তার সংশ্লিষ্ট একটি ইউনিটেই ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর পছন্দ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে তার পছন্দক্রম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য ইউনিটের বিভাগগুলোতে ভর্তি হতে পারবে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে কোচিং সেন্টারের কিছু শিক্ষার্থী। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য গত তিনদিন ধরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মঙ্গলবার ভর্তিচ্ছু দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে মানববন্ধন করতে দেখা গেছে। তবে মানববন্ধনে সরেজমিনে দেখা গেছে, মানববন্ধনে অংশ নেয়া সকলেই রাজশাহীর বিভিন্ন কোচিংয়ের শিক্ষার্থী।
মানববন্ধনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানববন্ধনে যারা এসেছেন তাদের অধিকাংশই ‘এডমিশন চ্যালেঞ্জ’ ও ‘আইকন প্লাস’ কোচিংয়ের শিক্ষার্থী। কোচিংয়ের দুইজন শিক্ষকের সহায়তায় তারা মানববন্ধন কর্মসূচিতে এসেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভর্তিচ্ছু একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার বাড়ি রাজশাহীর বিনোদপুরে। আমি উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করেছি। আমি বিজ্ঞান বিভাগেই ভর্তি পরীক্ষা দিব। আর সেজন্য আমি ‘এডমিশন চ্যালেঞ্জ’ এ কোচিং করছি। বন্ধুদের অনুরোধে আমি এখানে এসেছি।’
অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, এ বছর আমরা যারা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করেছি, তারা বিভাগ পরিবর্তন করে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারব না। এই বিষয়টি জানার পর আমরা কোচিংয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলি। তারাই মূলত আমাদের এ ধরনের আন্দোলনের পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজশাহীর ‘এডমিশন চ্যালেঞ্জ’ কোচিংয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর তাদের কোচিং এ ১২০০ এর অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করেছে, যারা বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে চায়।
এ দিকে মানববন্ধন চলাকালীন কোচিং সেন্টারগুলোর চারজন শিক্ষককেও সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ‘আইকন প্লাস’ কোচিংয়ের তানজিম আরেফিন নামের একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরামর্শও দিচ্ছিলেন।
জানতে চাইলে তানজিম আরেফিন বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই তিনি মানববন্ধনে এসেছেন। আন্দোলনের জন্য শিক্ষকরা কোনো ধরনের পরামর্শ দেয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের মানবন্ধনে কোচিংয়ের শিক্ষকরা কেন এসেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর দেননি তিনি।