মোরেলগঞ্জে স্ব মহিমায় উজ্জ্বল ৫ জয়িতা

মেহেদী হাসান লিপন,মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট)সংবাদদাতাঃ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় স্ব মহিমায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছে ৫ জয়িতা। জীবন যুদ্ধে জয় করে নিয়েছে জয়িতার সফলতা। ‘জয়িতা অন্বেষনে বাংলাদেশ’ এর আওতায় সফল জননী নারী হিসেবে জাহানারা বেগম,অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে মাহামুদা বেগম, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানে ফুলমালা বেগম, পারিবারিক নির্যাতনের বিভিষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্্েযাগে এগিয়ে যাওয়া নারী ফিরোজা বেগম জয়িতা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন।

সফল জননী নারী হিসেবে জয়িতার সম্মাননা পেয়েছেন বলইবুনিয়া ইউনিয়নের শ্রেণীখালী গ্রামের মো. সামছুর রহমানের স্ত্রী জানানারা বেগম। তিনি লেখাপড়ায় মেধাবী ও সবসময় ১ম স্থানে থাকলেও গ্রাম্য সামাজিক কুসংষ্কারের কারনে প্রাথমিক স্তরের পর আর লেখাপড়া হয়নি। লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছা শক্তিকে পূঁজি করে তার ৫ সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ও কর্মক্ষেত্রে উজ্জ্¦ল সাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তার ১ম সন্তান আবু তাইয়েব খান এমএ পাশ করে স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত, ২য় সন্তান তারেক আহমেদ বিসিএস ক্যাডার (এসপি) অফিসার, ৩য় ছেলে বাংলাদেশ আনসারের সার্কেল আ্যাডজুট্যান্ট, ৪র্থ ছেলে ড. হাসান ইমাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক, ৫ম ছেলে মো.মুরাদ খান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত।

Post MIddle

পারিবারিক বাঁধা থাকা সত্ত্বেও স্বামীর সহযোগীতায় নিয়ে আর্থিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন পশ্চিম বহরবুনিয়া গ্রামের আলী হোসেন রিপনের স্ত্রী মাহামুদা বেগম। উচ্চ শিক্ষার আশা থাকলেও আর্থিক অনটনে এসএসসি পাশের পরই বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর সংসারেও অভাব অনটনের কারনে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার ইচ্ছা পোষনে পারিবারিক বাঁধা আসে।তারপরেও পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে স্বামীর সহযোগীতা নিয়ে মোরেলগঞ্জ নব্বইরশি বাসষ্টান্ডে দর্জি ব্যবসা করেন। এতেই তিনি মোটামুটিভাবে আর্থিকভাবে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি পেয়েছেন চিংড়াখালী ইউনিয়নের পাথুরিয়া গ্রামের আবুল হোসের কাজীর স্ত্রী ফুলমালা বেগম। আর্থিক অনটনে পারিবারিক জীবনে অগ্রগতিতে এগোতে না পারলেও সামাজিক উন্নয়নে তিনি অনেক এগিয়ে গেছেন। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে মহিলা উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সংগঠন করে সামজ সেবায় আত্মনিযোগ করেন। বাল্যবিবাহ,যৌতুক , নারী ও শিশু পাচার , নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে এলাকায় গণসচেনতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।

পারিবারিক নির্যাতনের বিভিষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্্েযাগে এগিয়ে যাওয়া নারী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন স্বামী পরিত্যক্তা ফিরোজা বেগম । হতদরিদ্র কৃষক পিতা মোকাম্মেল শিকদারের ৭ সন্তানের মধ্যে সে মেঝ। বিয়ের পর স্বামীকে যৌতুক দিতে না পারায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হন। সন্তান সহ তাকে ফেলে রেখে স্বামী অন্যত্র বিয়ে করেন। এতেও তিনি দমে যায়নি। নানা প্রতিকূলতার কাটিয়ে নিজ চেষ্টায় স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করেন। চেষ্টার ফসল হিসেবে নিজে ৮ শতক জমি কিনে নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। চেষ্টা করছেন সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করতে। ##

পছন্দের আরো পোস্ট