টেবিলে ছিঁড়ে পড়ল চলন্ত ফ্যান

­

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও মেরামত না করা এবং হল কর্মকর্তার দায়িত্বে গাফিলতির কারণে শিক্ষার্থীর পড়ার টেবিলে ছিঁড়ে পড়েছে একটি অর্ধ-অকেজো সিলিং ফ্যান। এতে ফ্যানের নিচে পড়া থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ৪০০২ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। তবে এটিকে ‘প্রাকৃতিক ঘটনা’ বলে দায়সারা ভাব দেখিয়েছেন অত্র হল কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সোহাগ।

ভুক্তভোগী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান নোবেল এর সাথে কথা বলে জানা যায়, ফ্যানটি গত বিশদিন ধরেই চলার সময় বিকট শব্দ করত। এই সমস্যা নিয়ে তিনি এবং তার কক্ষের আরেক শিক্ষার্থী দুইবার হলের অভিযোগ খাতায় ফ্যান নষ্টের বিষয়টি জানান। কিন্তু ফ্যানটি মেরামত না করায় শুক্রবার দুপুরে তা চলন্ত অবস্থায় ছিঁড়ে নিচে পড়ে যায়।

ঐ শিক্ষার্থী আরও জানান, ‘আমি প্রায় ১৫ দিন আগে হলের কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সোহাগের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন ফ্যানের কোথায় সমস্যা। আমি তাকে বলি ফ্যান চালালে বিকট শব্দ হয়, আর অভিযোগ দিয়ে আসি। কোন প্রতিকার পাইনি, আর আজ ফ্যানটি ছিঁড়ে পড়ল।’

প্রত্যক্ষদর্শী ঐ রুমের অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমি নামাজ থেকে এসে আমার পাশে বিছানায় বসে ছিলাম। এরই মাঝে নোবেলের টেবিলে চলন্ত ফ্যানটি বিকট শব্দে ছিঁড়ে পরে৷ সে সৌভাগ্যবশত ছিলনা, থাকলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।’

Post MIddle

ফ্যানটি নিয়ে অভিযোগ দেয়া আরেক শিক্ষার্থী তৌহিদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, ‘অভিযোগের পর একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান এসে ফ্যান দেখে বলেন এটা ফ্যানের সমস্যা। আমার কিছু করার নেই। আপনারা হল কর্তৃপক্ষকে বলেন। এরপর হলের কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সোহাগকে জানালে তিনি বলেন নতুন ফ্যান আসলে ফ্যান পাবে, আর না হয় নিজেরা ঠিক করে ফেল।’

এদিকে অত্র হলের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ রয়েছে হল কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সোহাগের বিরুদ্ধে। গত ৩০ এপ্রিল হলের ৩০৪ নং কক্ষের এক আবাসিক শিক্ষার্থী ঐ কক্ষের নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাকে জানালে তিনি বলেন, ‘এই ফ্যান কে ঠিক করে দিবে? ফ্যান ঠিক করার জন্য আমি চাকরি করি নাকি? আপনি প্রভোস্ট স্যারকে জানান। এটা আমার কাজ না।’

এ বিষয়ে হল কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সোহাগ বলেন, ‘আমি এ ধরনের কথা বলি নাই। অভিযোগকারী কথা ঘুরিয়ে বলছে।’

বিভিন্ন সময়ে হল কর্মকর্তা দায়িত্বে অবহেলা করেন অভিযোগ করে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, কর্মকর্তা সোহাগ প্রায়শই শিক্ষার্থীদের সাথে রুঢ় আচরণ করেন। কোনো অভিযোগ জানালে তিনি ‘এটা আমার কাজ না’ বলে এড়িয়ে যান।

ফ্যান ছিঁড়ে পড়া প্রসঙ্গে সোহাগ বলেন, ‘এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। আজ শুক্রবার আমাকে একটু সময় দিতে হবে৷ আমি ইলেক্ট্রিশিয়ান পাঠাচ্ছি। তারা এসে ঠিক করে দেবে।’

হল কর্মকর্তার অসাদাচরণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অত্র হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, ‘হলের কর্মকর্তা হিসেবে হলের দেখভালের দায়িত্ব তার কাজের আওতায় পড়ে। এসব ব্যাপারে তার অনীহা প্রকাশ করা অনুচিত। আমরা শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধার স্বার্থেই হলের দায়িত্বে আছি।’

ফ্যান ছিঁড়ে পড়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ফ্যান ছিঁড়ে পড়ার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি দ্রুত লোক পাঠাচ্ছি। ওরা ঠিক করে দিবে।’

প্রতিনিধি/এমকে

পছন্দের আরো পোস্ট