২৫ এর বাইশ- সবুজের পানে পঁচিশের টানে

সোহেল আহসান নিপুঃ

ক্যাম্পাস জীবনের অসংখ্য স্মৃতিচারনের লক্ষে একটি দিন আনন্দের ভেলায় ভাসলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবির) ২৫তম ব্যাচের হাজারো শিক্ষার্থী। স্মৃতির রোমন্থনে সহপাঠীদের সঙ্গে মাতলেন গল্প, আড্ডা, নাচ আর গানে। প্রাণের বন্ধনে একে অপরের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে প্রত্যেকেই যেন কয়েক মুহুর্তের জন্য ফিরে গিয়েছিলেন সেসব হারানো দিনে। খুঁজে পেয়েছেন ক্যাম্পাস জীবনের সেই উচ্ছ্বল, বাধাহীন, তারুণ্য ও যৌবনের ছোট ছোট গল্পগুলো। গতকাল শুক্রবার (১৫ মার্চ ২০১৯) জাবির ২৫তম ব্যাচের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক মিলনমেলা। “২৫ এর বাইশ- সবুজের পানে, পঁচিশের টানে” এই শ্লোগানকে ধারণ করে এ মিলনমেলার আয়োজন করা হয়।

এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থল সাজানো হয় মনোরম সাজে। ২৫ এর বন্ধুদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। বয়স, পদ ও সামাজিক অবস্থান ভুলে তারা হারিয়ে যান নিজেদের যৌবনে। ক্যাম্পাসের ফেলে আসা সেই রঙিন জীবনকে খুঁজে ফেরেন তারা। টিএসসি, ডেইরি গেট, বটতলা, লাভরোড কিংবা চৌরঙ্গির আড্ডা, দুরন্তপনা অথবা আন্দোলন সংগ্রামের উত্তাল দিনগুলো তাদের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে। দিনভর আনন্দ-উল্লাস, ছবি তোলা, বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা, হৈ চৈ ও কোলাহলে মেতে থাকেন সবাই।

Post MIddle

সকালে র‌্যালির মাধ্যমে শুরু হয় মিলন মেলার বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে মিলনমেলার উদ্বোধন করেন। এসময় অন্যান্যের মাঝে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফেন্ডস’ ইনিসিয়েটিভ (জুফি) ২৫ এর সভাপতি সাদিক এইচ কে মনন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ারুল কাইয়ুম চৌধুরী রাজু, কোষাধ্যক্ষ শাহ নেওয়াজ কবির শুভ্রসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং পঁচিশ ব্যাচের অংশগ্রহণকারী বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, এ ধরনের মিলনমেলায় সকলেই প্রাণের তাগিদে উপস্থিত হন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের মর্যাদাশীল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ২৫ ব্যাচের সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। বিকেলে মুক্তমঞ্চে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেন ২৫ এর বন্ধুরা। তারা এই একত্র হওয়াকে শুধুমাত্র মিলনমেলা বলতে নারাজ। তারা এটিকে একটি স্মৃতিচারণ মেলা বলে মনে করেন। এমন আয়োজনের পিছনের কারিগরদের ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেন, সবাইকে একত্রিত করার এই প্রয়াস স্বার্থক হয়েছে।

দিনব্যাপী এই বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে ছিলো বৃক্ষরোপন কর্মসূচী, গরীব ও ছিন্নমূল পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা। মধ্যাহ্ন ভোজের পর বিকেলে ২৫ এর বন্ধুদের আড্ডা, সেলফি এবং সন্ধ্যায় মুক্তমঞ্চে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পাপেট শো অনুষ্ঠিত হয়। স্মৃতিচারণ, আড্ডা, গান ও গল্পের মধ্য দিয়ে তারা সারাটা দিন কাটান প্রাণের ক্যাম্পাস জাবিতে। ফেরার সময় সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছিল “২৫ এর বাইশ, সবুজের পানে, পঁচিশের টানে” আবার আসিব ফিরে।

পছন্দের আরো পোস্ট