স্বপ্ন যখন শিক্ষকতা

মেহেদী তারেক, গণ বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষক মানেই গুরুগম্ভীর মানুষ। এই ধারণা এখন পাল্টে গেছে। এখন শিক্ষক হওয়া চাই অন্যরকম। বন্ধুর মতো, তবে বন্ধু নয়। একসময় ছিল গুরুমুখী বিদ্যা। যেখানে গুরু হাতে-কলমে শিষ্যদের শিক্ষা দিতেন। এরপর এল লেকচার সিস্টেম। অর্থাৎ শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক নিজেই পুরো বিষয় আলোচনা করবেন আর শিক্ষার্থীরা শুধু তা গলাধঃকরণ করবে। কিন্তু এখন উন্নত দেশগুলোর ন্যায় আমাদের দেশেও চালু হয়েছে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা। কথাগুলো বলছিলেন সাভারের নাজমুজ আলম অনিক।

বইকে বন্ধুর মত ভালবাসেন নাজমুল । সারা দিন বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকাতেই যেন তাঁর সুখ। সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় ব্যাচের এই শিক্ষার্থী আইন বিভাগ থেকে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে অনার্স এবং ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে আশা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি চলমান। অনার্সে তাঁর সিজিপিএ ছিল ৩.৮১, আর মাস্টার্সে আরও ভাল সিজিপিএ অর্জনই  তার লক্ষ্য । ২০০৭ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ভর্তি যুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হয় বাংলা ও ইতিহাস বিভাগে। কিন্তু নিজের ছোট বেলা থেকেই অনেক পছন্দের বিষয় আইন। তাই ভর্তি হলেন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

Post MIddle

সবে পড়ালেখার পাট শেষ হতে না হতেই নাজমুল আলম অনিক চেষ্টা করছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক হতে।  আত্মবিশ্বাসী নাজমুল জানান, ‘মা আমার বড় অনুপ্রেরণা। তিনি   সরকারী চাকুরি করেন তাঁর মতে শিক্ষক হওয়ার জন্য আমি লড়ে যাব। তবে আমার লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া। এক্ষেএে বন্ধু-বান্ধবের উৎসাহ ছিল অনেক বেশী। কারণ ক্লাশে কেউ কোন বিষয় বুঝতে না পারলেই ছুটে আসতো আমার কাছে। তখন থেকেই আত্মবিশ্বাস আরও দ্বিগুণ গাড় হতে থাকে।

শুধুই কি পড়াশোনায় ভালো নাকি সে; বইয়ের বাইরে নাজমুলের  জগতের বাকিটা সময় কাটে পারভেজ, বাবু, সোহান, বর্ষা, মলি, আসিফের মতো প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে। তাঁর বন্ধুরা জানান, শুধু পড়াশোনায় ঝলক দেখায় না নাজমুল, বেশ ভালো গান,আবৃত্তি, উপস্থাপনা, লেখালেখি ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত থাকতে ভালোবাসে সে।

আর সুযোগ পেলেই নাজমুল বন্ধুদের নিয়ে  বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসে আড্ডায় মেতে ওঠেন। আর বিরক্ত বা একঘেয়েমি মনে হলেই বন্ধুদের নিয়েই চলে যান দূরে কোথাও ঘুরতে। নিজের সম্পর্কে নাজমুল জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আরও দূরে যেতে চাই। বাংলাদেশের জন্য নিজের জায়গা থেকে কিছু করতে চাই।’
শুধু বইয়ের মধ্যে পড়ে থাকেননি নাজমুল, পড়ার পাশাপাশি শিক্ষাজীবনে অংশ নিয়েছেন বেশ কিছু জাতীয় শিক্ষা সম্মেলনে। এখন শুধু স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষা।

পছন্দের আরো পোস্ট