ব্যারিস্টার রাবিয়া ভূঁইয়াকে সংবর্ধনা দিলো ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন

নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে “ডক্টর অব লজ’’ উপাধিতে ভূষিত হওয়ায় আপিল বিভাগের আইনজীবী ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রাবিয়া ভূঁইয়াকে সংবর্ধনা দিলো ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন। বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) গুলশানের ওয়স্টেনি হোটেলে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী ব্যারিস্টার ড. রাবিয়া ভূঁইয়া নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক। তিনি নারী আইনজীবীদের জন্যও মাইলস্টোন। তিনি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন একজন উঁচু মানের আইনজীবী এবং নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যারিস্টার রাবিয়া ভূঁইয়ার অবদান রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘দেশে গুণগত শিক্ষা ব্যবস্থা একটি চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ উত্তোরণে ব্যারিস্টার রাবিয়া ভূঁইয়ার প্রতিষ্ঠিত ভূঁইয়া একাডেমি দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে। ডক্টর অব ল’জ ডিগ্রি উপাধিতে ভূষিত হওয়ায় রাবিয়া ভূঁইয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তার এই অর্জন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।’

ব্যারিস্টার রাবিয়া ভূঁইয়া বলেন, ‘নারীর অধিকার নিয়ে বিভিন্ন অবদানের কারণে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন তাকে যে সম্মাননা দিয়েছে, এজন্য আমি তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেদিন নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য শূন্যের কোঠায় চলে আসবে, সেদিনই আমার এই অর্জন সার্থক হবে।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস, বৃটিশ হাইকমিশনার এলিসন ব্লকে, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের পরিচালক সাইমন আস্কে।

Post MIddle

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন– আপিল বিভাগের বিচারপতি ইমান আলী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীরা।

এর আগে গত ৬ মার্চ বৃটেনের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন তাদের ১৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়াকে “ডক্টর অব লজ” উপাধতে ভূষিত করেন। দেশ-বিদেশে নারীদের শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানস্বরূপ তাকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তিনি এশিয়ার দ্বিতীয় এবং দেশের প্রথম নারী হিসেবে এ সম্মান অর্জন করেন।

প্রসঙ্গত, ড. রাবেয়া ভূঁইয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী ব্যারিস্টার ও আপিল বিভাগের প্রথম নারী আইনজীবী। তিনি ১৯৭৩ সালে ব্রিটেনের লিংকন ইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার এট ল ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ১৯৮৯ সালে প্রথম বৃটিশ সিলেবাসের আদলে এলএলবি কোর্স (অনার্স) এর জন্য ভূঁইয়া একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। এ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। পাঁচশ’র বেশি শিক্ষার্থী বার এট ল অর্জন করে আইনাঙ্গনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন।

১৯৮৫-৮৭ সাল পর্যন্ত সমাজকল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া। তিনি বর্তমানে সুপ্রিম র্কোটরে আপিল বিভাগের অন্যতম আইনজীবী।

পছন্দের আরো পোস্ট