জাবির অাইন ও বিচার বিভাগে মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা

“জাবির অাইন ও বিচার বিভাগে মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত” বিভাগের কক্ষ তিনটিতে লোকে লোকারন্য। হঠাৎ চাপরাশি গলা ছেড়ে জানালেন কোর্ট বসছে। বিজ্ঞ বিচারক তার আসনে বসলেন।

পেশকার একে একে মামলার শিরোনাম বলা শুরু করলেন। শুরু হল পর্যায়ক্রমে মামলার শুনানী। ঠিক পূর্ব দিকে আসামী কার্ট গরায় দাঁড়িয়ে। বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল যুক্তি-পাল্টা যুক্তি চলছে। বাদী পক্ষ চাচ্ছে আসামী শাস্তি পাক। অপরদিকে বিবাদী পক্ষও নিরব নয়। তারাও তাদের মক্কেলদের বাঁচাতে যুক্তির স্ফুলিঙ্গ ছড়াচ্ছে। ঠিক যেন কোর্টেরই পরিবেশ।

এমনই আবহে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন ও বিচার বিভাগে মুট কোর্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এলএলবি কোর্সের অংশ হিসেবে এই মুট কোর্টের অায়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) সহযোগিতায় মুট কোর্ট কম্পিটিশন ২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়।

১ডিসেম্বর( শনিবার) সকাল ১০ টায় একদিন ব্যাপী মুট কোর্ট শুরু হয়। অাইন অনুষদের ডীন অধ্যাপক বশির অাহমেদ মুট কোর্টের অানুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতীকী এ মামলায় বাদী, বিবাদী, সাক্ষী, আইনজীবী, চাপরাশি, পেশকারসহ অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেন। এতে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সভাপতি ও মুট কোর্ট ক্লাসের সমন্বয়কারী শিক্ষক কে এম সাজ্জাদ মহসিন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট ডিভিশনের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক নিজামুল হক।

Post MIddle

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। এটি মূলত ছিল পরিবেশ অাইন এবং সাংবিধানিক অাইন বিষায়ক মুট কোর্ট। বিভাগের অাটটি দল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এতে বিজয়ী হয় গ্রুপ ‘বি’ এবং রানাস অাপ হয় গ্রুপ ‘এফ’।

গ্রুপ ‘এফ’ এ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চুয়াল্লিশ তম অাবর্তনের নাদিয়া ইসলাম নদী, নওরীন সুলতানা এবং তেতাল্লিশ তম অাবর্তনের শিক্ষার্থী অাদুল্লাহ্ বীন মাসুদ। অন্যদিকে গ্রুপ ‘বি’ তে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চুয়াল্লিশ তম অাবর্তনের শিক্ষার্থী শারজিন জাহান ফিয়া, কাজী তাপসী রাবেয়া ও মো. অায়নাল হক। উল্লেখ্য, বেস্ট মুটার হয়েছেন নাদিয়া ইসলাম নদী এবং বেস্ট রিসার্চার হয়েছেন অায়নাল হক।

প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং সমাপনী বক্তব্যে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক নিজামুল হক বলেন, “এ ধরণের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান অাইনের ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ উকিল, বিচারক এবং অগ্রনেতা হতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, অাশা রাখি এ ধারা অব্যাহত থাকবে”। অাইন ও বিচার বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক কে এম সাজ্জাদ মহসিন বলেন, ‘দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোর্টের আদলে একটি মুট কোর্টের অায়োজন করা হয়।

এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা এজলাস এবং বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে বাস্তবিক ও স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা যেন এখান থেকে দক্ষ হয়ে বের হতে পারে সেজন্য জোর প্রচেষ্টা থাকবে’। তিনি অারো বলেন, “২০১১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অাইন ও বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে এটাই ছিল সব চেয়ে বড় এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ মুটিং ইভেন্ট”।

সবশেষে মুট কোর্টের কার্যক্রমের সাথে জড়িত সকলের প্রতি সভাপতি কে এম সাজ্জাদ মহসিন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পছন্দের আরো পোস্ট