ইবি উপাচার্যের দুই বছর
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই এর মূল এজেন্ডাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলা।
যেন দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়ালেখার সুযোগ পায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি নানা কারণে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারেনি। এত দিনেই অনেক ভাইস চ্যান্সেলর দায়িত্ব পালন করলেও চোখে পড়ার মতো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এবং কেউই আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে পারেননি।
২০১৬ সালে ২১শে আগষ্ট ১২তম উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট কলামিস্ট, লেখক, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মো: হারুন -উর- রশিদ আসকারী
তিনি দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই যেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে তার নতুন যৌবন।
আন্তর্জাতিকরণের রুপকার ড. রাশিদ আসকারীর বলিষ্ট নেতৃত্বে সততা- স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা কে মূলমন্ত্র ধরে উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো: সেলিম তোহাকে সাথে নিয়ে দূর্বার গতিতে ক্যাম্পাসকে ঢেলে সাজিয়ে চলেছেন।
তিনি দায়িত্ব নিয়ে প্রথম ভিসির বাসভবনের ভাড়া হিসেবে তার পুরো হাউজরেন্ট কর্তনের নির্দেশ দেন, যা বিগত উপাচার্যগনের সময় মাসিক তিনশত টাকা হারে কর্তন করা হতো। যেখানে প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে মাত্র ২২টি বিভাগ ছিল সেখানে অধ্যাপক রাশিদ আসকারী দায়িত্ব গ্রহনের পর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে নতুন অত্যাধুনিক যুগোপযোগী
৮ টি বিভাগ চালু করে শিক্ষার্থী ভর্তি ও সকল বিভাগে সফলভাবে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিতে সমর্থ হয়েছেন। এক নজরে বর্তমান প্রশাসনের উন্নয়ন চিত্রের অংশবিশেষ:
১. প্রধান ফটকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর দৃষ্টিনন্দিত মূর্যাল ‘মৃত্যুন্জয়ী মুজিব’,কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার,বঙ্গবন্ধু কর্ণার ও একুশে কর্ণার স্থাপন
২. দীর্ঘ ১৬ বছর পর গত ৭ জানুয়ারী মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মো: আবদুল হামিদ- এর উপস্থিতিতে দেশের সর্ববৃহৎ সফল ৪র্থ সমাবর্তন আয়োজন
৩. ধারাবাহিকভাবে মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ বিরোধী সচেতনতামূলক সভা সেমিনার ও দেশের সর্ববৃহৎ র্যালীর আয়োজন। সার্বিক নিরাপত্তায় পুরো ক্যাম্পাস পিটিজেট সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা
৪. সর্বক্ষেত্রে দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রদর্শন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল উপ প্রকৌশলী তৈমুর রেজা তুহিনকে পদ অবনমন করে শাখা কর্মকর্তা,প্রধান প্রকৌশলী মকবুল হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান ,যৌন হয়রানীর অভিযোগে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক জনাব আসাদুজ্জামানকে চাকুরীচূত্য করা ইত্যাদি।
৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম ৫৯টি বিভাগ সম্বলিত সুচারুপে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার রোডম্যাপ অর্গানোগ্রাম পাশ হয়েছে
৬. চীন-জাপান-ভারত-নিউজিল্যান্ডে
৭. ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে ৬টি ভবন, পাওয়ার স্টেশন, নতুন পানির লাইন স্থাপনের কাজ একসাথে চলছে যা এখন শেষ পর্যায়ে
৮. এই প্রথম ৫০০ কোটি টাকার মেগা প্রোজেক্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা কর্তৃক একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নুতন ৯টি দশতলা ভবন এবং ১৯টি ভবনের ভার্টিকেল বর্ধিতকরন, আধুনিক বিজ্ঞান ল্যাবসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা
৯. শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা প্রবর্তন করে এবং শিক্ষার বানিজ্যিকীকরণ বন্ধ করতে দীর্ঘ দিনের সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করে তিনি প্রশংসা অর্জন করেছেন । এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষায় গুচ্ছ পদ্ধতি ও এমসিকিউ এর সাথে ২০ নম্বরের লিখিত যুক্ত করা বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন।
১০. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত ও আভ্যন্তরীণ আয় বাড়াতে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যার সুফল ইতোমধ্যে পাওয়া শুরু হয়েছে। বর্তমান প্রশাসনের দুই বছর মূল্যায়ন করতে গিয়ে একাধিক সিনিয়র শিক্ষক বলেন – অামরা মুগ্ধ হয়েছি বর্তমান উন্নয়নের ধারা দেখে, যেন ইবিতে রেনেসাঁর যুগ শুরু হয়েছে, যে কেন মূল্যে উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
এদিকে প্রগতিশীল নেতৃস্থানীয় শিক্ষকরা মনে করেন, প্রগতিশীল শিক্ষকদের মাঝে যেন কোন অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে সে জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জাতীয় নির্বাচন কে সামনে রেখে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে প্রগতিশীল শিক্ষকদের প্রতি অাহব্বান জনান সংগঠনটি নেতৃবৃন্দ।
এবিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: হারুন – উর- রশীদ অাসকারী বলেন, অামার লক্ষ্য world class university বির্নিমান করা, তাই ব্যাক্তিগত কোন এজেন্ডা নয় তাই সকলকে সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন মূলক কাজ করে যাচ্ছি, এই উন্নয়নের গতি যেন কেউ ব্যাহত করতে না পারে সে জন্য তিনি সকলের সাহযোগিতা কমনা করেন।