বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি

প্রাচীন গুরু শিষ্যের ধারা থেকে যখন শিক্ষকতা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করলো, তখন থেকেই গৃহশিক্ষক এবং গৃহশিক্ষকতা নামক নতুন ধারাও সৃষ্টি হল। আজকের কোচিং সেন্টার সেই গৃহশিক্ষকতারই একটি পরিবর্তিত, বিস্তৃত ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ।

যদিও আজকে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এর অবদান ও অবস্থান নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে এর শুরুটা ছিল সমালোচনাহীন। বস্তুতঃ শিক্ষক যখন মাতৃ-প্রতিষ্ঠান বিদ্যালয়কে গুরুত্ব না দিয়ে কোচিং সেন্টারকে গুরুত্ব দিতে শুরু করলেন। তখন থেকেই সমালোচনাহীন কোচিং সেন্টার সমালোচনার শিকার হতে শুরু করলো। তবে, কোচিং সেন্টারে শুধু বিদ্যালয়ের শিক্ষকগনই শিক্ষকতা করেন না। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকতা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়র ভর্তি পরীক্ষার প্রতিযোগিতা। এই ভর্তি পরীক্ষার প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে দেশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন কোচিং প্রতিষ্ঠান। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলে জীবনের অনেকাংশ স্বপ্নপূর্ণ হয়ে যায়। বাকিটা নির্ভর করে পরবর্তী অধ্যবসায় আর ত্যাগের ওপর। তাই মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষের পর একদিনও দেরি করতে রাজি নন অভিভাবক কিংবা শিক্ষার্থীরা। শুরু হয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি। কেউ কেউ এটাকে রীতিমতো ভর্তিযুদ্ধ বলেও মনে করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোচিংয়ে ভর্তি হওয়া এখন একটি নিয়ম হয়ে গেছে।

Post MIddle

কিছুদিন পরেই শুরু হবে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো স্বায়ত্বশাসিত হওয়ায় সেগুলোর ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস বা ধরণ বিভিন্ন রকম। ইতোমধ্যেই ভর্তিচ্ছুদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই বিভিন্ন কোচিং এ ভর্তি হয়ে গেছে আবার অনেকেই কোচিং ছাড়াই বাসায় নিজের মত প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে অনেকে ভর্তির সাথে যুদ্ধ যুক্ত করে ভর্তিযুদ্ধ নামে অভিহিত করে থাকেন ।

কারণ এই পরীক্ষায় অনেকের সাথে প্রতিযোগীতা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিট অর্জন করে নিতে হয়। ভর্তি পরীক্ষার আগে কঠোর পরিশ্রম, হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগীতা ফলে এটিকে একধরনের নীরব যুদ্ধই বলা যায়। এতে যারা সঠিক উপায়ে ,পরিকল্পনা করে এবং কৌশল অবলম্বন করে প্রস্তুতি নিতে পারে তারাই এই ভর্তিযুদ্ধে নিজের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বিজয়ী হতে পারে।

অনেকেই পড়তে চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা করতে প্রতিটি আসনের জন্য লড়তে হয় ৩০ থেকে ৪০ জনের সঙ্গে। তাই, যথাযথ প্র¯‘তি ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় সফল হওয়া খুবই কঠিন। এ লক্ষ্যে শিক্ষার্থীগণ সর্বোচ্চ প্রস্তুতির জন্য কোচিং সেন্টারগুলোর শরনাপন্ন হয়ে থাকে। সেই কঠিন কাজটিকে সহজ করতে বিগত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যস্ত রয়েছে ইউসিসি। সে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই আয়োজিত হয়েছিল মডেল পরীক্ষা।

কোচিং সেন্টার গুলোতে ইউনিট অনুসারে আলাদা ব্যাচ গঠন করে শিক্ষার্থীদের কোচিং করিয়ে থাকে। কোচিং সেন্টার গুলোর ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় শাখা রয়েছে। সপ্তাহে তিনদিন ২ ঘন্টা করে ক্লাস, সাপ্তাহিক ক্লাস টেস্ট ও মডেল টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করে তোলে। শিক্ষার্থীদের কোর্স ম্যাটারিয়ালস (লেকচারসীট, ব্যাগ, হ্যান্ডনোট) প্রদান করা হয়। কোন কোন কোচিং সেন্টার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গাইড বই প্রকাশ করে থাকে।

পছন্দের আরো পোস্ট