আমায় বাঁচতে দিলো না ওরা

আমি যেদিন প্রথম মাটির নিচ থেকে মাথা তুলে তাকালাম, প্রথম সুর্য দেখলাম সেদিন অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম কারন আমিই যে মানব জাতির অক্সিজেনের উৎস।যদিও মানুষ নামক প্রানিরা আদৌ এটা ভাবে না।
 ধীরে ধীরে আমি একটু একটু করে বেড়ে উঠছিলাম আর আমার স্বপ্নের জগৎ টাও বাড়ছিল।আমার  যখন হাত-পা গুলো বেড়ে উঠলো,তখন দুষ্ট ছেলেমেয়েরা আমার হাত-পা ধরে টানাটানি শুরু করল,মাঝে মাঝে ওরা আমার হাত-পা ভেঙ্গে দিতো।জানো,তখন আমার বড্ড কষ্ট হতো।চোখ দিয়ে প্রায় পানি চলে আসতো। বলো,আমার ও তো একটা জীবন আছে?
আমি যখন যৌবনে পর্দাপন করেছিলাম,আমার সৌন্দর্য দেখে কতো মানুষ মুগ্ধ হতো,আমার ছায়াতে কতো মানুষ সারাদিনের ক্লান্ততা দূর করতো,আমার ফল খেয়ে কতো মানুষ ক্ষুধা মিটিয়েছে। আমার তখন খুব ভালো লাগতো জানো,নিজেকে ধন্য মনে করতে শুরু করেছিলাম।
Post MIddle
কিন্তু হঠাৎ একদিন দেখি কিছু লোক হাতে প্রচারপত্র না কি সব বলে, নিয়ে আমার দিকে আসছে। ওরা আমার বুকের ঠিক মাঝখানটাতে পেরেক ঠুকিয়ে দিয়েছিল।জানো, সেদিন আমি খুব কেদেছিলাম ব্যাথার যন্ত্রনায়।কিন্তু দুপায়ী অকৃতজ্ঞ মানুষগুলো আমার কান্না একটু ও দেখতে পেল না।ওরা নাকি আমার বুকে ওদের অবস্হান জানান দিচ্ছে।ওরা ওদের প্রচারবোর্ডে আমাকে ঢেকে ফেলেছিল।মানুষ নামক এ দুপায়ী প্রানীগুলো এত নিষ্টুর কেন বলতে পারো?ওরা আমার শাখা-প্রশাখা ও কেটে নিয়ে যায়।  আচ্ছা,ওরা কি জগদীশচন্দ্র বসুর  “গাছেরও প্রাণ আছে” এ কথা ভুলে গেছে?
এভাবে পেরেকের ঠোকরে ঠোকরে ওরা আমাকে ক্ষত বিক্ষত করে দিল।ভেবেছিলাম অনেক দিন বাঁচবো, নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে সাহায্য করে যাবো।কিন্তু অকৃতজ্ঞ মানুষগুলো আমাকে বাঁচতে দিল না।আমাকে ওরা মেরে ফেললো পেরেকের ঠোকরে ঠোকরে।
উম্মে হাবিবা। ইংরেজি বিভাগ। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
পছন্দের আরো পোস্ট