ওড়নায় যেন আর টান না পড়ে

নারীতো নয় কোনো পণ্য ,যে কেউ কিনে হবে ধন্য । নারীদের আলাদা করে সম্মান দেয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্যই হয়ত পালিত হচ্ছে এই নারী দিবস। কিন্তু সে দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য পূরন হচ্ছে কি আসলেই ?

না আমারতো  মনে হয় না ?  তাহলে কি আর ৭ই মার্চ এ অদিতি,শোভার মতো মেয়েদের এইভাবে ফেসবুকে পোষ্ট দিতে হতো?  হতো না।   পথে ঘাটে সকলের সামনে এইভাবে তার মান সম্মান  রক্ষার জন্যে তাদের যুদ্ধ  করতে হতো, হতো না অল্প  বয়সি মেয়েদের রেপ হতে।হতে হতো না অন্যর লালসার শিকার ।

এই দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালে কিন্ত এই দেশের নারী রা এখনো অন্যর অধীন হয়েই বেঁচে রয়েছে। নারীদের এখন ও যুদ্ধ করতে হয় শান্তিতে  ঘরে ফিরার জন্য, কোন হায়ানার চোখে মলেস্ট না হওয়ার জন্য তাকে পদে পদে যুদ্ধ  করেই যেতে হচ্ছে।তাহলে নারীদের স্বাধীনতা কোথায় ? ও ঘরের কোণে বুঝি?থাক,ঘরের গল্পটা না হয় আজ নায় করলাম।
আবার আপনি এই লোলুপ কাজকর্ম যদি  চুপচাপ মেনে নেন তাহলে আপনি সমাজে আপনি অনেক ভালো কিন্ত যখন ই প্রতিবাদ করবেন তখন ই আপনি খারাপ, আপনি সমাজ বিরোধী  ।

কারনটা কি?কারণটা হলো আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা পুরুষ শাসিত। আচরনগুলো যদি হতো রাস্তার ছেলেদের ক্ষেত্রে তাহলে অনেক কষ্ট হলেও মেনে নেয়া যায়। কিন্ত এইরুপ আচরন যখন কোন শিক্ষিত ছেলের কাছে থেকে পাওয়া হয় তখন কষ্ট  আরো বেশি লাগে।

অনেক সময় মেয়েদের দেহের গঠনের দিকে তাকিয়ে মজা নেয়া হয়, এইটা কোন ধরনের মজা ? মজা নিতে হলে নিজের মা বোনের গঠন তাকিয়ে মজা নিও, তখন আসলেই মজাটা বুঝা যাবে।

Post MIddle

আবার মেয়েরা কেউ ফেসবুকে লিখলে সেইসব নিয়েও ছেলেদের মজার শেষ  নাই। সেইখানে তাদের কমেন্ট থাকবে -এমন জানোই তো ভিড় হবে, যাওয়ার কি দরকার ? মেয়েদের এত বাইরেই যাওয়ার দরকার কি,নিশ্চয় ই মেয়ের কোন দোষ ছিল। আবার কিছু মানুষের রুচি এতোই খারাপ যে তারা পাল্টা পোষ্ট দেয়া শুরু করে। তা নিতান্ত কোন মেয়েদের বিদ্রোহী অথবা প্রতিবাদী হয়ে উঠতে বলার কথাগুলো মজা হিসেবে নেয়। তাদের রুচিবোধ এতোই নিচে। সম্মান দিয়া তো দূর মেয়েরা বললেই সেইটা নিয়ে মজা।

যদিও সমাজ ব্যাবস্থা পুরুষ শাষিত কিন্ত দেশ চালানোর দায়িত্ব মেয়েদের হাতেই। কিন্তু তারপর ও শুনতে হয় নানান ধরনের বাজে কথা যা শুনে কান্না পায় কিন্ত সেই কান্না শুনার মতো মানুষ এই সমাজে খুবই কম।

হয়তো এই হায়ানার মতন পুরুষ ও বুঝবে যেদিন দেখনে তাদের মা, বোন, স্ত্রী এইভাবেই পথে ঘাটে এই অবস্থার মুখোমুখি হবে সেদিন হয়ত বুঝবে অন্যের মা বোনকে নিয়ে মজা নিলে তাদের কেমন লাগে।

আমরা চাই না আলাদা করে নারীদের নিয়ে কোন দিবস হোক। আমরা চাই এই সমাজের পুরুষদের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসুক।আমরা যেন কোন চিন্তা ছাড়ায় বের হতে পারি ঘর থেকে।

প্রতিদিন যেন পুরুষের চোখে মলেস্ট না হতে হয় । আমাদের ওড়নায় আর যেন  টান না পরে, টান না পরে আমাদের চুলে। আমরা যেন  না হই আর নিতান্ত ই কোন  ছেলেদের মজা নেয়ার উৎস। লাগবে না আলাদা করে দিবস।  শুধু দিবস চাই পরিবর্তন পুরুষের চিন্তাধারার।

সারমিন আক্তার মায়া,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রসায়ন বিভাগ

 

পছন্দের আরো পোস্ট